ইস্তাহার/হিপি
বিতৃষ্ণার তিক্ত বিষ সঞ্চিত প্রাচুর্যে ভোগে,
সামাজিক জটিলতা নিয়মের শৃঙ্খলপাশ
ছিন্ন করে মুক্ত প্রাণে দুরন্ত উদ্যোগে
ব্যক্ত হয় বাউণ্ডুলে হিপিদের জীবন নির্যাস।
নগ্ন প্রকৃতির কোলে প্রীতি প্রেমে আত্ম নিবেদনে
আদি সভ্য মানবের যথাযথ যোগ্য বংশধর
দীর্ঘ যৌথ ধূমপানে অনায়াসে সত্তা বিসর্জনে
পথে প্রান্তরে তারা শুদ্ধ করে তরল অন্তর।
আত্মভোলা হরগৌরী, সংসারের নেই প্রয়োজন,
সঞ্চয়ে বিমুখ, অর্থের অর্থ নাহি বোঝে,
আনন্দ পারদ প্রেমে ক্ষ্যাপা অকৃপণ
ঈশ্বরের বরপুত্র জীবনের নব সংজ্ঞা খোঁজে।
যত্র তত্র কুটুম্বের মতো নেয় শুভ আমন্ত্রণ,
নিস্কৃত্রিম দর্শনের উদার উদাস ভাবধারা
সর্ব দিকে সঞ্চারিয়া সর্ব জীবে সমজ্ঞানে করিয়া আপন
ইস্পাতের যুগে আনে উদ্ভট বিচিত্র নব সাড়া।
বিসদৃশ বেশভূষা আচার বিচার বহির্ভূত,
লিপ্সাহীন নির্বিরোধ যেন যোগী অতিশয় ত্যাগী;
সমাজের দ্বারপ্রান্তে আশ্চর্য আগস্তুক অনাহুত
গৈরিক হৃদয় তার বোধ হয় প্রকৃতই বাউল বৈরাগী।
তার জন্যে সমাজের কোন ঘরে কোন কোণে নেই কোন ঠাঁই,
মুক্ত গগনতলে অনির্দিষ্ট প্রান্তে তার শাস্তির আস্তানা,
অন্তহীন যাত্রাপথে কোন দিকে ভ্রূক্ষেপও নাই,
ছন্নছাড়া গন্তব্যের মেলে না সঠিক ঠিকানা।
পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে তবু এক রঙা নদীর মতো
যথারীতি এসে তারা এক স্রোতে সাগরেতে মেলে,
তাদের দেখলে কেউ হিপি বলে চেনে স্বভাবতঃ,
অন্য কোন বিশ্ব যেন কোটি হিপি গড়ে হেসে খেলে।