উৎসর্গ/সংযোজন/১
‘ হে পথিক , কোন্খানে
চলেছ কাহার পানে । '
গিয়েছে রজনী , উঠে দিনমণি ,
চলেছি সাগরস্নানে ।
উষার আভাসে তুষারবাতাসে
পাখির উদার গানে
শয়ন তেয়াগি উঠিয়াছি জাগি ,
চলেছি সাগরস্নানে ।
‘ শুধাই তোমার কাছে
সে সাগর কোথা আছে । '
যেথা এই নদী বহি নিরবধি
নীল জলে মিশিয়াছে ।
সেথা হতে রবি উঠে নবছবি ,
লুকায় তাহারি পাছে —
তপ্ত প্রাণের তীর্থস্নানের
সাগর সেথায় আছে ।
‘ পথিক তোমার দলে
যাত্রী ক ' জন চলে । '
গণি তাহা ভাই শেষ নাহি পাই ,
চলেছে জলে স্থলে ।
তাহাদের বাতি জ্বলে সারারাতি
তিমির - আকাশ - তলে ।
তাহাদের গান সারা দিনমান
ধ্বনিছে জলে স্থলে ।
‘ সে সাগর , কহো তবে
আর কত দূরে হবে । '
‘ আর কত দূরে ' ‘আর কত দূরে '
সেই তো শুধাই সবে ।
ধ্বনি তার আসে দখিন বাতাসে
ঘনভৈরবরবে ।
কভু ভাবি ‘কাছে ' , কভু ‘দূরে আছে ' —
আর কত দূরে হবে ।
‘ পথিক , গগনে চাহো ,
বাড়িছে দিনের দাহ । '
বাড়ে যদি দুখ হব না বিমুখ ,
নিবাব না উৎসাহ ।
ওরে ওরে ভীত তৃষিত তাপিত
জয়সংগীত গাহো ।
মাথার উপরে খররবিকরে
বাড়ুক দিনের দাহ ।
‘ কী করিবে চলে চলে
পথেই সন্ধ্যা হলে । '
প্রভাতের আশে স্নিগ্ধ বাতাসে
ঘুমাব পথের কোলে ।
উদিবে অরুণ নবীন করুণ
বিহঙ্গকলরোলে ।
সাগরের স্নান হবে সমাধান
নূতন প্রভাত হলে ।