পত্র।

শ্রীমতী ইন্দিরা। প্রাণাধিকাসু।
    নাসিক।


চারিদিকে তর্ক উঠে সাঙ্গ নাহি হয়,
 কথায় কথায় বাড়ে কথা !
সংশয়ের উপরেতে চাপিছে সংশয়
 কেবলি বাড়িছে ব্যাকুলতা!
ফেনার উপরে ফেনা, ঢেউ পরে ঢেউ,
 গরজনে বধির শ্রবণ,
তীর কোন্ দিকে আছে নাহি জানে কেউ
 হা হা করে আকুল পবন।

এই কল্লোলের মাঝে নিয়ে এস কে
 পরিপূর্ণ একটি জীবন,
নীরবে মিটিয়া যাবে সকল সন্দেহ,
 থেমে যাবে সহস্র বচন।

তোমার চরণে আসি মাগিবে মরণ
লক্ষ্যহারা শত শত মত,
যে দিকে ফিরাবে তুমি দুখানি নয়ন
সে দিকে হেরিবে সবে পথ!


অন্ধকার নাহি যায় বিবাদ করিলে,
মানে না বাহুর আক্রমণ!
একটি আলোক শিখা সমুখে ধরিলে
নীরবে করে সে পলায়ন।
এস মা উষার আলো, অকলঙ্ক প্রাণ,
দাঁড়াও এ সংসার আঁধারে।
জাগাও জাগ্রত-হৃদে আনন্দের গান,
কূল দাও নিদ্রার পাথারে!


চারিদিকে নৃশংসতা করে হানাহানি,
মানবের পাষাণ পরাণ!
শানিত ছুরীর মত বিঁধাইয়া বাণী,
হৃদয়ের রক্ত করে পান।

তৃষিত কাতর প্রাণী মাগিতেছে জল
উল্কাধারা করিছে বর্ষণ,
শ্যামল আশার ক্ষেত্র করিয়া বিফল
স্বার্থ দিয়ে করিছে কর্ষণ।

শুধু এসে একবার দাঁড়াও কাতরে
মেলি দুটি সকরুণ চোক,
পড়ুক দু ফোঁটা অশ্রু জগতের পরে
যেন দুটি বাল্মীকির শ্লোক!
ব্যথিত, করুক্ স্নান তোমার নয়নে,
করুণার অমৃত নির্ঝরে,
তোমারে কাতর হেরি, মানবের মনে
দয়া হবে মানবের পরে!


সমুদয় মানবের সৌন্দর্য্যে ডুবিয়া
হও তুমি অক্ষয় সুন্দর।
ক্ষুদ্র রূপ কোথা যায় বাতাসে উবিয়া
দুই চারি পলকের পর!

তোমার সৌন্দর্য্যে হোক্ মানব সুন্দর,
প্রেমে তব বিশ্ব হোক আলো।
তোমারে হেরিয়া যেন মুগুধ অন্তর
মানুষে মানুষ বাসে ভাল!

বান্দোর।