চিত্রে জয়দেব ও গীতগোবিন্দ/তৃতীয় খণ্ড/প্রেম-প্রকরণ

প্রেম
প্রকরণ

 বৈষ্ণব কবিদের একমাত্র বিষয় হলো, রাধাকৃষ্ণের প্রেম। এই প্রেমের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা ছাড়া, এর প্রকাশের একটা স্বতন্ত্র ধারা আছে। বৈষ্ণব রসিকেরা এই প্রেমের বিবর্ত্তনকে একটা নির্দ্দিষ্ট ও নিয়মবদ্ধ প্রণালীর ভেতর দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। রসের ক্ষেত্রে এই বিস্তার ও বিশ্লেষণ বৈষ্ণব কবিতাকে বিচিত্র মাধুর্য্যের বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বীজ থেকে ফলের জন্মের মধ্যে যেমন অনিবার্য্য কতকগুলি স্তর আছে, তেমনি প্রেমের জন্ম থেকে প্রেমের পরিণতি পর্য্যন্ত অনিবার্য্য কতকগুলি স্তর বা অবস্থার ভেতর দিয়ে প্রেমিক প্রেমিকাকে যেতে হয়। বৈষ্ণব রসাচার্য্যরা মনের সমস্ত অবস্থা ও গতি অতি সূক্ষ্মভাবে পরিলক্ষণ ক’রে এক অভিনব প্রেম-প্রকরণ-বিজ্ঞানের জন্ম দিয়েছেন। সাহিত্য লিখতে হলে যেমন ব্যাকরণ মেনে চলতে হয় এবং যিনি স্বাধীনতা নিতে জানেন তিনি ব্যাকরণ সত্ত্বেও তা নিতে পারেন, তেমনি বৈষ্ণব-সাহিত্যের ক্ষেত্রে রসের একটা ব্যাকরণ আছে, প্রত্যেক বৈষ্ণব কবিকে যা মেনে চলতে হয় এবং যার সঙ্গে পরিচিত না হলে বৈষ্ণব কবিতার পূরো আস্বাদ পাওয়া যায় না। এখানে সংক্ষেপে তার প্রধান অংশগুলির পরিচয় দেওয়া হলো।