হু হু করে ছুটে চলেছে ট্রেন তাপসীর বিক্ষুব্ধ অন্তরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে।... পালিয়ে যাচ্ছে সে। দুর্ব্বার এক আকর্ষণের হাত থেকে। কিরীটির কাছ থেকে। দীর্ঘদিন নিজের সঙ্গে অহরহ যুদ্ধ করে ক্ষতবিক্ষত তার মন আজ বুঝি আত্মরক্ষার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। তাই সে পালিয়ে যাচ্ছে তার অভিশপ্ত জীবন নিয়ে কিরীটির সঙ্গে তার বাগদানের আসর থেকে। কারণ—সে পূৰ্ব বিবাহিতা, উৎসর্গীকৃত! ট্রেন ছুটে চলেছে কুসুমপুরের দিকে।..তাদের বংশের ভিটে। দশ বছর আগে সেখানে একদিন ভাগ্য তার সঙ্গে খেলেছিল এক নিষ্ঠুর প্রহসন। তার সবেমাত্র বয়ঃসন্ধি। এক মৃত্যুপথযাত্রীর কামনায় কি করে যে তার বিয়ে হয়ে গেল তার কিশাের নাতির সঙ্গে — সে বােধ হয় বুঝতেও পারেনি। সেদিন। সব অনুষ্ঠানও সম্পূর্ণ করা যায়নি। শুধু বন্ধনটুকুই অক্ষয় হয়ে রইলাে। শুধু মনে পড়ে সেদিন সকালে রাধাবল্লভজীর মন্দির প্রাঙ্গনে যে সপ্রতিভ কিশােরটি হাসিমুখে এসে দাড়িয়েছিল—তার পরণে ছিল পূজার চেলীর বাস, দেবকুমারের মতােই ছিল তার কান্তি । যেখানে পা দুখানি সে রেখেছিল সেখানে বুঝি দুটি রাঙা স্থল পদ্মই ফুটে উঠেছিল। উগ্র আধুনিকা তার মা চিত্রলেখা। ‘পুতুল খেলা’র এ বিয়েকে তিনি স্বীকার করেননি। তার মেয়ের রূপ আছে। নব্য শিক্ষায়, সভ্যতায় তাকে পটিয়সী করে তাদের হাল ফ্যাসানের সমাজের সকলকে টেক্কা দেবার সাধ তার।কোথাকার গ্রাম্য জমিদারের নাতি বুলু। কতাে বিলাতফেরৎ ধনী
পাতা:অগ্নিপরীক্ষা - প্রচার পুস্তিকা (১৯৫৪).pdf/৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কাহিনী