—তা দেড় সের সাত পোয়ার কম হবে না, আন্দাজে বলছি। এখানে তো দাঁড়িপাল্লা নেই।
বাবুর বাড়ী পাঠিয়ে দিবিনে তো ব্যাটা কোথায় দিবি? এই অবেলায় সাতপোয়া মাছ নিয়ে দাম দেবার খ্যামতা আছে ক’জনের এ গাঁয়ে! দে পাঠিয়ে দে।
আমি মৃদু বিরক্তি জানিয়ে বললাম—কি ওসব বাজে কথা বকো এর সঙ্গে সনাতনদা। মাছ দিতে বললে, অত কথার দরকার কি?
সনাতন অপ্রতিভ হবার লোক নয়, চড়াগলায় বললে—কেন, অন্যায় অন্যায্য কথা নেই আমার কাছে। ঠিকই বলেছি ভায়া। তুমি ছাড়া নগদ পয়সা ফেলবার লোক কে আছে গাঁয়ে? আসল লোকই তো তুমি—
রোগীর বাড়ীতে গ্রামের বৃদ্ধলোকেরা জুটেছে। শিবু ডাক্তারও ছিল। শিবু ডাক্তার সেকেলে আর. জি. করের স্কুলের পাশ গ্রাম্য ডাক্তার। আমাকে দেখে একটু থতমত খেয়ে গেল।
আমি আড়ালে ডেকে বললাম—কি দিয়েছেন? প্রেসক্রিপসানগুলো দেখি?
শিবু বললে—কুইনিন দিচ্ছি।
—ভুল করেচেন। যখন দেখলেন জ্বর বন্ধ হচ্ছে না, তখন কুইনিন বন্ধ করা উচিত ছিল। এ হোল টাইফয়েড, সেদিনই যাচ্চে।
আমিও তা ভেবেচি—অ্যালকালি মিকশ্চার দুদিন দিয়েছিলাম।