সে নাচিয়েছে, কিন্তু একদিনও তাকে বোন্ ছাড়া অন্য চোখে দেখিনি।
মাঝি উঠে এসে বললে—বাবু, বাড়ি যাবেন নাকি?
—না, আজ আর যাবো না।
—বাড়িতে ভাববেন।
—তুই যা না কেন, আমি একখানা চিঠি দিচ্চি।
—তার চেয়ে বাবু, আমি বলি, আপনি চলুল না কেন। আমি আবার আপনাকে দুপুরের পর পৌঁছে দেবো।
—আচ্ছা, আমি ভেবে দেখি, তুই বাইরে বোস্।
ফরসা হয়ে গেল রাত। সঙ্গে সঙ্গে রাতের মোহ যেন খানিকটা কেটে গেল। মনে মনে ভাবলাম যাই না কেন বাড়িতে। সুরবালার সঙ্গে দেখা করে আবার আসবো এখন।
কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত যাওয়া হোল না, নিয়তির ফল বোধ হয় খণ্ডন করা দুঃসাধ্য। যদি যেতাম বাড়িতে মাঝির কথায়, তবে হয় তো ঘটনার স্রোত অন্য দিকে বইতো। কিন্তু আমি ডাক্তারি পাশ করেছিলাম বটে মেডিকেল কলেজ থেকে, তবুও আমি মূর্খ। ডাক্তারি শাস্ত্র ছাড়া অন্য কোনো শাস্ত্র আমি পড়িনি, ভালো ভালো কথা কোনো দিন আমায় কেউ শোনায় নি, জীবনের জটিলতা ও গভীরতা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই আমার। সরল ও অনভিজ্ঞ মন নিয়ে পাড়াগাঁয়ের নিরক্ষর রুগীর হাত দেখে বেড়াই।
যাওয়া হোলো না, কারণ গোবিন্দ দাঁ ও আবদুল হামিদ এসে প্রস্তাব করলে আজ একটা বনভোজনের আয়োজন করা