আমি তখন নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছি, প্রেমের ও মোহের নিষ্ঠুরতায়—ওর মুখে ‘তুমি’ সম্বোধনে। আমি বলি—যদি গাছতলায় রাখি? না খেতে দিই?
—মেরে ফেলো আমাকে। তোমার হাতে মেরো। টুঁ শব্দটি যদি করি তবে বোলো, পান্না খারাপ মেয়ে ছিল।
—তোমার আত্মীয় স্বজন?
—কেউ নেই আমার আত্মীয় স্বজন।
—তোমার মা নেই?
পান্না তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে ঠোট উটে দুর্দ্দান্ত বিদ্রোহের সুরে বললে—ভারী মা!
—বেশ চলো তবে। যা হয় হবে। আমি কিন্তু পয়সা নিয়ে বার হইনি, তা তুমি জানো।
—আবার ওই কথা?
বেলা তিনটের সময় ট্রেন শেয়ালদ’ পৌঁছুলে স্টেশন থেকে সোজা একখানা ঘোড়ার গাড়ী ভাড়া করে ভবানীপুর অঞ্চলের এক ক্ষুদ্র গলিতে পান্নার বাসায় গিয়ে ওঠা গেল।
রাত্রে আমার ভাল ঘুম হোল না। আমি এমন জায়গায় কখনো রাত কাটাইনি। পল্লীটা খুব ভাল শ্রেণীর নয়, লোক যে না ঘুমিয়ে সারা রাত ধরে গান বাজনা করে, এও আমার জানা ছিল না। সকালে উঠে পান্নাকে বললাম—পান্না, আমি এখানে থাকবো না!
পান্না বিস্ময়ের সুরে বললে—কেন?
—এখানে মানুষ থাকে?