পেছনে কেউ না কেউ—সেবার খুলনে গেল, সঙ্গে এল সেই পরেশবাবু। পোড়ার মুখো নড়তে আর চায় না। পনেরো দিন হয়ে গেল, তবু নড়ে না—বলে, পান্নার সঙ্গে আমার বিয়ে দাও মাসী—সে কি কেলেঙ্কারী! তবে পান্না তাকে মোটেই আমল দেয়নি, তাই সে টিকতে পারলো না—নইলে বাপু, তা অমন কত এল, কত গেল।
পান্না বললে—আঃ মাসী, কি বলচো বসে বসে? যাও—
বুড়ী হাত-পা নেড়ে বললে—যাবো না কি থাকতে এসেচি? তোমার ঘাড়ে বাসা বেঁধে বসেচি? এখন অল্প বয়েস, বয়েস দোষ যে ভয়ানক জিনিস। হিত কথা শুনবি তো এই মাসীর মুখেই শুনবি—বেচাল দেখলে রাশ আর কে টানতে যাবে কার দায় পড়েচে?
বুড়ী গজ্ গজ্ করতে করতে উঠে চলে গেল।
আমি পান্নাকে অনেকক্ষণ দেখিনি। অনুযোগের সুরে রললাম—আমি বাড়ি চলে যাব আজ, ঠিক বলচি—
—কেন? কেন? এই বুড়ীর কথায়! তুমি—
—সে জন্যে না। তুমি এতক্ষণ কোথায় ছিলে?
—এই!
পান্না মুখে কাপড় দিয়ে খিল্খিল্ করে হেসে উঠলো।
আমি রাগের সঙ্গে বললাম—হাসচো যে বড়?
ও বললে—তোমার কথা শুনলে না হেসে থাকা যায় না। তুমি ঠিক ছেলেমানুষের মত। আমি এমন মানুষ যদি কখনো দেখেচি!