বলেই হাত দুটো অসহায় হাস্যের ভঙ্গিতে ওপরের দিকে ছুঁড়ে ফেলবার মত তুলে আবার হাসতে লাগলো।
ওই সেই অপূর্ব্ব ভঙ্গি হাত ছোঁড়ার, সারা দেহের ঝলমলে লাবণ্য, মুখের হাসি আমাকে সব ভুলিয়ে দিলে। ও আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে বললে—তুমি চলে গেলেই হোল! মাইরি! পায়ে মাথা কুটবো না?
আমাকে ও চা দিয়ে গেল। বললে—খাবে কিছু?
সুরবালার কথা মনে পড়লো। সুরবালা এমন বলতো না, খাবার নিয়ে এসে রাখতো সামনে। আমি জানি এদের সঙ্গে সুরবালাদের তফাৎ কত। না জেনে বোকার মত আসিনি। সুরবালা সুরবালা, পান্না পান্না—এ নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বাক্যবিন্যাস করে কোনো লাভ নেই। পান্না খাবার নিয়ে এল। চারিখানা তেলে ভাজা নিমকি, এক মুঠো ঘুগনি দানা, দুখানা পাঁপর ভাজা। এই প্রথম ওর হাতের জিনিস আমাকে খেতে হবে। মন প্রথমটা বিদ্রোহ করে উঠেছিল—কিন্তু তার পরেই শান্ত হয়ে এল। কেন খাবো না ওর হাতে?
একটা কথা আমার মনে খচ্খচ করে বাজছিল। পান্নার ঘরে লোক আসে রাত্রে, বুড়ী বলছিল। যতবার এই কথাটা মনে ভাবি, ততবার যেন আমার মনে কি কাঁটার মত বাজে।
বললাম কথাটা পান্নাকে।
পান্না বললে, কি করতে বলো আমায়?
—এ সব ছেড়ে দাও।