পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৩
অথৈজল

 হেসে উড়িয়ে দেবার ভঙ্গিতে বললাম—ও, এই!

 সুরবালা উদ্বেগের সুরে বললে―না সত্যি। তোমার মুখে যেন—

 —ও কিছু না। একটু ঘুমুই—


 —একটু ওষুধ খাও না কিছু? তুমি তো বোঝ—

 —কিছু না। মশারিটা ফেলে দিয়ে যাও, ঘুমুই একটু—

 সকালে সনাতনদা এসে হাজির হোল। বললে—এ কি হে? তুমি হঠাৎ কোথাও কিছু নয়, কোথায় চলে গেলে? বৌমা কেঁদে কেটে অস্থির।

 বললাম—কলকাতায় গিয়েছিলাম!

 —কেন, হঠাৎ?

 —বিশেষ কারণ ছিল।

 —সে আমি বুঝতে পেরেছি। নইলে তোমার মত লোক হঠাৎ অমনি না বলা কওয়া কলকাতা চলে যাবে? তা কি কারণটা ছিল?

 —সে একটা অন্য ব্যাপার।

 —সনাতনদা আর বেশি পীড়াপীড়ি করলে না। আমার মুস্কিল আমি মিথ্যে কথা বড় একটা বলিনে, বলতে মুখে বাধে—বিশেষ কাজে হয়তো বলতে হয় কিন্তু পারতপক্ষে না বলারই চেষ্টা করি। অন্য কথা পাড়লাম তাড়াতাড়ি। সনাতনদা দু’তিনবার চেষ্টা করলে কলকাতা যাবার কারণটি জানবার। আমি প্রতিবারই কথা চাপা দিলাম। সনাতনদা বললে—মঙ্গলগঞ্জে যাবে নাকি?