মধ্যে চাবি দিয়ে রেখে ষ্টেশনে চলে এলাম। আড়াই কোশ রাস্তা হাঁটতে হোল সেজন্যে।
পান্না আমায় দেখে অবাক। সে নিজের ঘরের সামনে চুপ করে একখানা চেয়ারে বসে আছে—কিন্তু সাজগোজ তেমন নেই। মাথার চুলও বাঁধা নয়।
আমি হেসে বললাম—ও পান্না—
—তুমি!
—কেন! ভূত দেখলে নাকি?
—তুমি কেমন করে এলে তাই ভাবচি?
—কেন আসবো না?
—সত্যি তুমি আমার এখানে এসেচ?
পান্না যে আমাকে দেখে খুব খুসি হয়েছে সেটা তার মুখ দেখেই আমি বুঝতে পারলাম। ওর এ আনন্দ কৃত্রিম নয়। পান্না আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে খাটের ওপর বসিয়ে একখানা হাতপাখা এনে বাতাস করতে লাগলো। ওর এ যত্ন ও আগ্রহ যে নিছক ব্যবসাদারি নয় এটুকু বুঝবার মত বুদ্ধি ভগবান আমাকে দিয়েচেন। আমি ওর মুখের দিকে চেয়ে দেখলাম বেশ একটু তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে। সে মুখে ব্যবসাদারির ধাঁজও নেই। আমি বিদেশ থেকে ফিরলে সুরবালার মুখ এমনি উজ্জল হয়ে ওঠে, কিন্তু সুরবালার এ লাবণ্য-ভরা চঞ্চলতা, এত প্রাণের প্রাচুর্য্য নেই। এমন সুন্দর অঙ্গভঙ্গি করে সে হাঁটতে পারে না, এমন বিদ্যুতের মত কটাক্ষ তার নেই, এমন দুষ্টুমির হাসি তার মুখে ফোটে না।