—মাসীকে কিছু বলো না যেন যাওয়ার কথা। বাইরে দেখে এসো তো কেউ নেই, না আছে?
পান্না মুখ টিপে হেসে বললে—সে আগেই আমি দেখেচি। এখনো কেউ উঠে নি। তুমি নিশ্চিন্দি থাকো। চা খেয়ে আমি বাড়ির বার হয়ে একটা পার্কে গিয়ে বসলাম। সারারাত ঘুম হয়নি, ঘুমে চোখ ঢুলে পড়েছে, কিন্তু একটা অদ্ভূত আনন্দে মন পরিপূর্ণ। করালী ঠিকানা দিয়েচে, ওকে একটা চিঠি লিখি। ওর দেশেই গিয়ে একটা বাসা নিয়ে প্র্যাক্টিস্ করবো।
আপততঃ কলকাতায় একটা ছোটখাটো বাসা দেখে আসা দরকার।
পার্কের বেঞ্চিতে শুয়ে পড়ে একটু ঘুমিয়ে নিলাম। যখন জেগে উঠলাম তখন বেলা সাড়ে ন’টা। একটা নাপিতকে ডেকে দাড়ি কামিয়ে নিলাম। চায়ের দোকানে আর এক পেয়ালা চা খেলাম। এইবার অবসাদ একটু কেটেচে। তারপর বাসা খুঁজতে বেরুই।
কলকাতায় আমায় কেউ চেনে না। ডাক্তারি পড়বার সময়ে যে মেসে থাকতাম, সেটা কলেজ স্কোয়ার অঞ্চলে। সে মেসে আমাদের সময়কার এখন কেউ নেই—যে যার পাশ করে বেরিয়ে গিয়েচে আট দশ বছর আগে। তাহোলেও এই অঞ্চলের অনেক মুদী, নাপিত, চায়ের দোকানী আমায় চেনে হয়তো। ও অঞ্চলেও গেলাম না বাসা খুঁজতে। এমন জায়গায় যেতে হবে যেখানে আমাকে কেউ চেনে না।