তা কখনো আসে? নারীর প্রেম কি বস্তু কখনো জানিনি জীবনে। সুরবালাকে বিবাহ করেছিলুম, সে অন্যরকম ব্যাপার। এ উন্মাদনা তার মধ্যে নেই। অল্পবয়সের বিবাহ, সুরবালা আমার চেয়ে দশ বছরের ছোট—এ অবস্থায় স্বামীস্ত্রীর মধ্যে এক ধরনের সাংসারিক ভালবাসা হোতেই পারে, আশ্চর্য্য নয়। একটি পরম বিস্ময়ের বোধ ও তজ্জনিত উন্মাদনা সে ভালোবাসার মধ্যে ছিল না। সে তো আগে থেকেই ধরে নিয়ে বসেছিলাম সুরবালা আমায় ভালবাসবেই। ভালোবাসতে বাধ্য। এ রকম মনোভাব প্রেমের পক্ষে অনুকূল নয়। কাজেই প্রেম সেখান থেকে শতহস্ত দূরে ছিল।
কিন্তু জিনিষপত্রের কি করি?
জিনিসপত্র না হোলে বড় মুস্কিল। পান্না শুয়ে আছে শুধু মেজেতে একখানা চাদর পেতে। সতরঞ্চি নেই, কার্পেট নেই—একখানা মাদুর পর্য্যন্ত নেই। সংসার পাততে গেলে কত জিনিস দরকার তা কখনো জানতাম না। সাজানো সংসারে জন্মেছি, সাজানো সংসারে সংসার পাতিরেছিলাম। এখন দেখছি একরাশ টাকা খরচ হয়ে যাবে সব জিনিস গোছাতে। কিছুই তো নেই। থাকবার মধ্যে আছে আমার এক সুটকেস, পান্নার এক টিনের পেঁটরা, তাতে ওর কাপড় চোপড়। মাথায় দেবার একটা বালিস নেই, জল খাবার একটা গ্লাসও নেই। দুশ্চিন্তায় আমার ঘুম হোল না।
পান্না ঘুম থেকে উঠলে আমি ওকে সব খুলে বলি।