সস্তায় দু’খানা মাদুর কিনে আনলুম। শালপাতা কুড়িদরে কিনে আনি দু’বেলা ভাত খাওয়ার জন্যে। পান্না ভাতে এতটুকু অসন্তুষ্ট নয়। যা আনি, ও তাতেই খুসি। আমার কাছে মুখ ফুটে এ পর্য্যন্ত একটা পয়সাও চায়নি। বরং দিতে এসেচে ছাড়া নিতে চায়নি। অদ্ভুত মেয়ে এই পান্না।
রাস্তায় নেমে এদিক ওদিক চেয়ে দেখলাম কেউ কোনো দিকে নেই। কি জানি কেন, আজকাল সর্ব্বদাই আমার কেমন একটা ভয় ভয় হয়, এই বুঝি আমাদের গ্রামের কেউ আমাদের দেখে ফেললে। আমার এ মুখের সংসার একদিন এমনি হঠাৎ, সম্পূর্ণ আকস্মিকভাবে ভেঙে যাবে।
আমার বুক সর্ব্বদা ধড়ফড় করে ভয়ে। ভয় নানারকম, পান্নাকে হয়তো গিয়ে আর দেখতে পারো না। ও যে ভালবাসা দেখাচ্চে হয়তো সব ওর ভাণ। কোনদিন দেখবো ও গিয়েচে পালিয়ে।
চা নিয়ে ফিরে এলুম। তখনও পান্নার চুলবাঁধা শেষ হয়নি।
পান্না বললে—খাবার কই?
—খাবার আনিনি তো!
—বাঃ, শুধু চা খাবো?
—পয়সাতে কুলোলো কই? চার আনাতে কি হবে।
—পাউডারের কোটোর মধ্যে যা ছিল সব নিয়ে গেলে না কেন? আবার যাও, নিয়ে এসো। একটা টাকা নিয়ে যাও।
টাকা নিয়ে আমি বেরিয়ে চলে গেলুম এবং গরম গরম কলাইয়ের ডালের কচুড়ী খান পঁচিশ একটা ঠোঙায় নিয়ে