পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৫
অথৈজল

না করলে বস্তুলাভ হয় না। আমার অনুভূতিকে বুঝতে হোলে আমার মত অবস্থায় এসে পড়তে হবে।

 পান্না আমায় রাত্রে বললে—নীলি পোড়ার মুখী কত কি বলে গেল আমায়।

 —কি?

 —বললে, এ সব কি আবার ঢং। ও বাবু কি তোকে চিরকাল এমনি চোখে দেখবে? তুই নিজের আসর নিজে নষ্ট করতে বসেচিস—

 —তুমি কি বললে?

 —আমি হেসেই খুন।

 আমাকে অবাক করে দিয়েচে পান্না। এর শ্রেণীর মেয়েরা শুনেছি কেবলই চায়, পুরুষের কাছ থেকে শুধুই আদায় করে নিতে চায়। কিন্তু ও তার অদ্ভুত ব্যতিক্রম। নিজের কথা কিছুই কি ও ভাবে না?

 আমার মত একজন বড় ডাক্তারকে গেঁথে নিয়ে এল, এসে কিছুই দাবি করলে না তার কাছে, বরং তাকে আরও নিজেই উপার্জ্জন করে খাওয়াতে চলেচে। এমন একটি ব্যাপার ঘটতে পারে আমি তাই জানতাম না। তার ওপর আমার বয়স ওর তুলনায় অনেক বেশি। দেখতেও আমি এমন কিছু কন্দর্প পুরুষ নয়। নাঃ, অবাক করেই দিয়েচে বটে।

 পান্না নীলিমার সঙ্গে মুজরো করতে যাবে বেথুড়হরি আমি বাসা আগলে তিন চার দিন থাকবো এমন কথা হোল।