পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
১৮৮

 —সব জায়গায় সতী ছিলে তুমিও? বিশ্বাস তো হয় না।

 পান্না গম্ভীর মুখে বললে—না। তোমার কাছে মিথ্যে কথা বলবো না। ভাবনহাটি তালকোলার জমিদার বাড়িতে কি একটা বিয়ে উপলক্ষে আমরা গেলুম মুজরোতে। জমিদারের ভাইপোর বিয়ে। সেই বিয়ের নতুন বর ভাইপো ক্ষেপে উঠলো আমায় দেখে সেই রাত্তিরে। আমায় নৌকোতে করে সারা রাত নিয়ে বেড়ালে।

 —বলো কি?

 —তারপর শোনো। সেই লোক বলে—আমরা চলো যাই কলকাতায় পালিয়ে। নতুন বৌকে ফেলে। বিয়ে হয়েছে, তখনও বুঝি ফুলশয্যে হয়নি। বলো কত টাকা চাও, বলো কত টাকা চাও—আমাকে হাতে ধরে পীড়াপীড়ি। কত বোঝাই—শেষে না পেরে বলি হাজার টাকা মাসে নেবো। তখন কাঁদতে লাগলো। পুরুষ মানুষের কান্না দেখে আমার আরও ঘেন্না হয়ে গেল। বলচে, আমার তো নিজের জমিদারি নয়, বাবা কাকা বেঁচে। হাজার টাকা করে মাসে কোথা থেকে দেবো? তবে নতুন বৌয়ের গায়ের তিন হাজার টাকার গয়না আছে, তুমি যদি রাজী হও আজ শেষ রাত্তিরে সব গয়না চুরি করে আনবো। শুনে তো আমি অবাক। মানুষ আবার এমন হয় নাকি? পুরুষ জাতের ওপর ঘেন্না হয়ে গেল। নতুন বউ, তার গয়না নাকি চুরি করে আনবে বলেচে। আমি সেই যে ফিরে এলাম আর