পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
১৯৬

 যদি না জানে ওর আস্বাদ, তবে ওরা বড্ড দুর্ভাগা। অমৃতের আস্বাদ পায়নি জীবনে।

 ভালবেসে আনন্দ নয়, ভালবাসা পেয়ে আনন্দ। এ কোনো ইডিয়াটি ব্যাপার নয়, নিছক সার্থপর ব্যাপার।

 একটু আস্বাদ করে আরও অস্বাদ করতে প্রাণ ব্যগ্র হয়ে পড়ে। বেলা পড়লে উঠে বাসায় ফিরলুম। পান্না কি সত্যই আছে? ও স্বপ্ন না তো? না, পান্না বসে চুল বাঁধচে। ওর সেই তোরঙ্গটা থেকে আয়না বের করেচে, দাঁত দিয়ে চুলের দড়ির প্রান্ত টেনে ধরেচে, বেশ ভঙ্গিটি করেচে।

 চমকে উঠে বললে—কে?

 পিছন ফিরে চাইতে গেল তাড়াতাড়ি।

 আমি বললাম—দোর খুলে রেখেচ কেন? একলা ঘরে থাকো, যদি চোর ঢোকে? বন্দ করে রেখো।


 ও অপ্রতিভ হয়ে বললে—আচ্ছা!

 —চুল বাঁধচো?

 —দেখতে পাচ্ছো না? চা খাবে তো?

 —নিশ্চয়ই!

 —চা চিনি নিয়ে এসো। কিছুই নেই।

 —পয়সা দাও।

 —নিয়ে যাও আমার এই পাউডারের কৌটো খুলে। এই যে—

 পয়সা নিয়ে নেমে গেলুম।