পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৯
অথৈজল

 পান্না দীর্ঘ শিস দেওয়ার সুরে কথাটা উচ্চারণ করে চুপ করে গেল।

 আমি জানি ও অত টাকা কখনো এক সঙ্গে দেখেনি। বললাম—তুমি ভাবছিলে কত টাকা?

 —আমি? আমি ভাবছিলাম পঁচিশ ত্রিশ।

 —দিতে?

 —আমার হার বাঁধা দাও, দিয়ে টাকা আনো।

 —থাক, রেখে দাও।

 সেদিন দু’টি ডিস্‌পেনসারিতে গিয়ে চাকুরির চেষ্টা করলাম। কোথাও সুবিধে হোল না। সেদিন বসে বসে অনেকক্ষণ ভাবলাম একটা নির্জ্জন স্থানে বসে।

 কিন্তু আসল কাজ হয়ে পড়লো অন্য রকম।

 পান্নাও নাচের আসরে বায়না নিতে লাগলো। আমি ওর সঙ্গে সর্ব্বত্র যাই, বাইজির পেছনে সারেঙ্গীওয়ালার মত। পরিচয় দিই দলের রসুইয়ে বামুন বলে, কখনো বলি আমি ওর দূর সম্পর্কের দাদা। এ এক নতুন ধরণের অভিজ্ঞতা; কত রকমের লোক আছে, কত মতলব নিয়ে লোকে ঘোরে, দেখি, বেশ ভাল লাগে। ওরই রোজগারে সংসার চলে। মাথ মাসের শেষে কেশবডাঙ্গা বলে বড় একটা গঞ্জের বারোয়ারির আসরে পান্নার সঙ্গে গিয়েছি। বেশ বড় বারোয়ারির আসর, প্রায় হাজার লোক জমেচে আসরে। তার কিছু আগে স্থানীয় এক পল্লীকবির ‘ভাব’ গান হয়ে গিয়েছে। অনেক লোক জুটেছিল ‘ভাব’ গান শুনতে। তারা সবাই রয়ে