পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
২০৪

ওকে অন্য চোখে দেখেচি। নইলে এত কথা আমি ওকে বলতাম না।

 ঝড়ু মল্লিকের নেশা যেন কেটে গিয়েচে। সব শুনে বললে—এ নিয়ে আমার বেশ ভাবগান তৈরি হয়। আসলে কি জানো ভায়া, ভাবেরই জগৎ। যার মধ্যে ভাবের অভাব, তাকে বলি পশু। এই যে তুমি, তুমি লোকটি কম নয়, নমস্য। যদি বল কেন, তবে বলি। ডাক্তারি ছেড়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে, স্ত্রী পুত্র ছেড়ে ওই এক ষোলো সতেরো বছরের মেয়ের পেছনে পেছনে কেন ঘুরে বেড়াচ্চ তুমি? সর্ব্বস্ব ছেড়ে ওর জন্যে। সবাই কি পারে? তোমার মধ্যে বস্তু আছে। ভায়া, এ সব সবাই বুঝবে না।

 আমি নিজের কথা খুব কমই ভেবেছি। এ ক’মাস। চুপ করে রইলাম।

 ঝড়ু বললে—এ জন্মে এই আসচে জন্মে এই ভাব দিয়ে তাঁকে পাবে?

 —তাঁকে কাকে?

 —ভগবানকে।

 উত্তরটা যেন তিনি প্রশ্ন করবার সুরে বললেন। আমার বেশ লাগছিল ওর কথা, শুনতে লাগলাম। কবি কিনা বেশ কথা বলতে পারে। তবে বর্ত্তমানে ভগবানের সম্বন্ধে আমার কোন কৌতূহল নেই, এই যা কথা।

 ঝড়ু আবার বললে—হ্যাঁ ভায়া, মিথ্যে বলচি নে। এই