পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯
অথৈ জল

পড়লো গ্রামের পল্লীমঙ্গল সমিতির ঘরের সম্মুখবর্ত্তী ক্ষুদ্র মাঠে। লোকজন অনেক জড় হোল ব্যাপার কি দাঁড়ায় দেখবার জন্যে। রামপ্রসাদ চোখে চশমা দিয়ে ফরসা পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে সভার এসে হাজির হোল। গ্রামের সব লোকই আমার পক্ষে। ডাক্তারকে কেউ চটাবে না!

 দারোগা রামপ্রসাদকে জিজ্ঞেস করলে—আপনার বিরুদ্ধে গ্রামের লোকের কি অভিযোগ জানেন?

 রামপ্রসাদ শুষ্কমুখে বললে—আজ্ঞে—আজ্ঞে—না।

 —আপনি গ্রামের একটা মেয়েকে নষ্ট করেছেন!

 —আজ্ঞে, আমি!

 —হাঁ, আপনি।

 আমার ইঙ্গিতে সনাতনদা বললে—উনি সে মেয়েমানুষটিকে নিজের বাড়ীতে দিনকতক রেখেছিলেন। উনি বিপত্নীক। আর একটা কথা, বাড়ীতে ওর একটা মেয়ে প্রায় বিয়ের যুগ্যি হয়ে উঠেছে, অথচ সেই মেয়েমানুষটাকে উনি বাড়ী নিয়ে গিয়ে রাখেন।

 দারোগা বললে—আমি এমন কথা কখনো শুনিনি। ভদ্রলোকের গ্রামে আপনি বাস করেন, অথচ সেই গ্রামেরই একটি মেয়েকে আপনি এভাবে নষ্ট করেছেন?

 সনাতন বললে—সে মেয়েও ভদ্রঘরের মেয়ে, স্যার। উনিই তাকে নষ্ট করেছেন।

 —মেয়েটি কি জাতের?

 —ব্রাহ্মণ বংশের স্যার। সে কথা বলতে আমাদের মাথা