—আমায় বিশ্বাস হয়?
—বিশ্বাস হয় কি না বলতে পারিনে। তবে তুমি যদি খুন করেও ফেলো, মনে দুঃখ না নিয়েই মরবো। তোমার ছুরি বুকে বিঁধবার সময় ভয় হবে না এতটুকু।
—আচ্ছা, তুমি এখন ঘুমোও, রাত অনেক হোলো আবার কাল তো সকাল সকাল নাচের আসর।
—ঘুমুই আর তুমি আমাকে মেরে ফেলো গলা টিপে, না?
—তা ইচ্ছে হয় তো গলা টিপে মারবো। ঘুমোও।
ঘুম ভেঙে উঠে দেখি পান্না তখনও অঘোরে ঘুমুচ্চে। আমি উঠে বাইরে গেলাম। একটা কদম গাছ ডালপালা বেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সকালের রোদ বাঁকাভাবে গাছটার উপর পড়েছে। গাছটার দৃশ্য আমার মনে এমন এক অপূর্ব্ব ভাব জাগালো, যে আমি প্রায় সেখানে বসে পড়লাম। কি যে আনন্দ মনে, আমার এত বৎসরের অভিজ্ঞতায় কখনো আস্বাদ করিনি। আজ আমি পথের ফকির, পসারওয়ালা ‘ডাক্তার’ হয়ে খেমটাওয়ালীর সারেঙ্গী নিয়ে বেড়াচ্ছি—কিন্তু আমার মনে কোন কষ্ট নেই, কোন খেদ নেই।
ঝড়ু মল্লিক ভাবওয়ালা যে পুরনো দোতলা বাড়িতে থাকে, সেটা একটা পুকুর পাড়ে। সারা রাত ভালো করে ঘুম হয়নি, পুকুরে স্নান করতে গিয়ে দেখি ঝড়ু ভাবওয়ালা পুকুরের ওপারে নাইচে।
আমায় দেখে বললে—ডাক্তারবাবু—
—কি বলুন।