পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১১
অথৈজল

বললাম—না সে কথা বলিনি। হঠাৎ আপনার হাতে হাত লাগলো, সেজন্যে আমি বড় দুঃখিত। কিছু মনে করবেন না। ভাল গরম নয়, ঠিকই আছে।

 মেয়েটি বললে—আপনি চমৎকার ভাব তৈরী করেন—

 আমি বললাম—আপনার ভালো লেগেছে?

 মেয়েটি পঞ্চমুখে সুখ্যাতি করতে লাগলো আমার গানের। এমন নাকি সে কোথাও শোনে নি। রোজ সে আসরে গিয়ে আমার মুখের দিকে অপলক চোখে নাকি চেয়ে থাকে। তারপর বললে, সে নিজেও গান বাঁধে। আমি চমকে উঠলাম। একজন কবি আর একজন কবি পেলে মনে করে অন্য সব জন্তু মানুষের মধ্যে এ আমার সগোত্র। তাকে বড় ভাল লাগে। আমি সেই মুহূর্ত্তে মেয়েটিকে অন্য চোখে দেখলাম। বললাম—কৈ, কি গান? দেখাবেন আমায়? সে লজ্জার হাসি হেসে বললে—সে আপনাকে দেখাবার মত নয়।

 কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত দেখালে। সে দিন নয়, পরের দিন দুপুরবেলা। বাইরের ঘরে শুয়ে বিশ্রাম করছি, বৌটি এসে বললে—ঘুমিয়েচেন। সেই গান দেখবেন নাকি?

 আমি বললাম—আসুন, আসুন। দেখি—

 মেয়েটি একখানা খাতা আমার সামনে ফেলে দিয়ে ঘর থেকে চলে গেল।

 আমি বসে বসে সব গানগুলো মন দিয়ে পড়লাম। বেশ চমৎকার ভাব আছে কোনো কোনো গানের মধ্যে। আসলে