পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৬
অথৈজল

পয়সা খরচ হতে লাগলো! তাকে নিয়ে উন্মত্ত, ভাব গাইতে যেতে মনে থাকে না—

 —বলুন, বলুন—

 আমি নিজের দলের লোক পেয়ে গিয়েছি যেন এতদিন পরে। কি মিষ্টি গল্প। আমার মনের যে অবস্থা, তাতে অন্য গল্প ভাল লাগতো না। লাগতো এই ধরণের গল্প। আমার মন যে স্তরে আছে, তার ওপরের স্তরের কথা যে যতই বলুক, সে জিনিস আমি নেবো কোথা থেকে? আমার মনের স্তরে ঝড়ু মল্লিক ভাবওয়ালা আমার সতীর্থ।

 ঝড়ু আমাকে একটা বিড়ি দিতে এলো। আমি বললাম—আমি খাইনে, ধন্যবাদ।

 ও বিস্ময়ের সুরে বললে—তুমি কি রকম হে ডাক্তার? মদ খাও না, সিগারেট খাও না, তবে এ দলে নেমেচ কেন? নাঃ, তুমি দেখছি বড় ছেলেমানুষ। বয়েস কত? চল্লিশ? আমার উন্নপঞ্চাশ। এ পথের রস কবে বুঝতে আরম্ভ করেচ। এর পর বুঝতে পারবে। রসের আস্বাদ যে না জানে, সে মানুষ নয়। রসে আবার স্তর আছে হে, এসব ক্রমে বুঝবে। এই রসই আবার বড় রসে পৌঁছে দেবার ক্ষমতা রাখে—আমি যে ক’বছর তাকে নিয়ে ঘুরেছিলাম, সেই ক’বছর ভাবের পদ আমার মনে আসতো যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মত। দিন নেই, রাত নেই, সব সময় ভাবের পদ মনে আসচে, গান বাঁধছি সব সময়, আর দুনিয়া কি রঙীন! সে ক’বছর কি চোখেই