নেই। মানে আমার নিজেরই যাবার কথা তা আমার রোগ বালাই নিয়ে সে চলে গেল—বড্ড ভালবাসতো কিনা?
ঝাড়ু ভাবওয়ালার চোখ দুটো চক্চক্ করে উঠলো। আমি আর কোন কথা বললাম না। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকবার পরে ঝড়ু বোধ হয় একটু সামলে নিয়ে বললে—পান্নাকে দেখে তার কথা মনে পড়লো, অবিকল ওর মত দেখতে—তাই আমি বলি তোমাকে—কিছু মনে কোরো না ভায়া—
—এখন কি একাই আছেন? ক’বছর আগের কথা তিনি মারা গিয়েছেন?
—ন’ বছর যাচ্ছে। না, একা নেই। একা থাকতে পারে আমাদের মত লোক? মিথ্যে সাধুগিরি দেখিয়ে আর কি হবে। আছে একজন, তবে তার মত নয়। দুধের সাধ ঘোলে মেটানো। আর ধরো এখন আমাদের বয়েসও তো হয়েছে? এই বয়েসে আর কি আশা করতে পারি?
বেলা প্রায় দশটা। আমি ঝড়ু মল্লিকের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় এসে দেখি পান্না কুটনো কুটচে, সেখানে দু’টি মেয়ে বসে আছে ওরই বয়সী। আমায় দেখে মেয়ে দু’টি উঠে চলে গেল। পান্না বললে—বোষ্টমের মেয়ে ওরা, এখানেই বাড়ি। আমি কীর্ত্তন গাই কিনা জিজ্ঞ্যেস করছিল।
—কেন, খেমটা ছেড়ে ঢপের দল বাঁধবে নাকি?
—তা নয়, মেয়ে দুটোর, ইচ্ছে নাচ গান শেখে। তা আমি বলে দিইচি গেরস্ত রাড়ির মেয়েদের এখানে যাতায়াত না করাই ভালো। আমরা উচ্ছন্ন গিয়েচি বলে কি সবাই যাবে?