পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
২২২

একই শ্রেণীর। পান্নাকে এবার যেন ভাল করে বুঝলাম। পান্না সেই ধরণের মেয়ে, যে ভাবের জন্য সব কিছু ত্যাগ করতে পারে। সংসারের ধার ধারে না, বেশি খোঁজ খবরও না। যা আসে, তাতেই মহা খুসি। ঝড়ু মল্লিকের মত পুরুষ আর ওর মত মেয়েকে সাধারণ লোকের পর্য্যায়ে ফেলাই চলে না। আমার তো ওদের মত ভাব নিয়ে থাকলে চলবে না, আমি খাঁটি বাস্তববাদী। পান্না যাই বলুক, আমাকে ওর কথায় কান দিলে চলবে না।

 কেশরভাঙ্গার বারোয়ারির আসরে পান্নার নাচ আরও দু’দিন হোল। ওর নাম রটে গেল চারি ধারে। সবাই ওর নাচ দেখতে চায়। আমায় বারোয়ারি কমিটির লোকেরা ডাক দিলে। একজন ব্যবসাদারের গদিতে ওদের মিটিং বসেছে। আমায় ওরা বললে—ও ঠাকুর মশাই, আপনাদের কর্ত্রীকে বলুন আরও দু’দিন এখানে ওঁর নাচ হবে—একটু কম করে নিতে হবে। সবাই ধরেচে তাই আমাদের নাচ বেশি দিতে হচ্চে। বারোয়ারি ফণ্ডে টাকা নেই।

 —কত বলুন?

 —ত্রিশ টাকা দু’দিনে।

 —আচ্ছা, জিজ্ঞ্যেস করে আসি।

 —আপনি যদি করে দিতে পারেন, আপনি দু’টাকা পাবেন।

 —আচ্ছা।

 হায়রে আমার হাসি পেল। দু’ টাকা। আমার