পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈ জল
২২

 —মুচলেকা না দিয়েই? কক্ষনো না। লেখো মুচলেকা!

 পাড়াগাঁয়ের লোক রামপ্রসাদ, যতই শৌখিন হোক বা বাবু হোক, পুলিশ-টুলিশের হাঙ্গামাকে যমের মত ভয় করে। আমি, জানি এ মুচলেকা দেওয়ার কোনো মূল্যই নেই আইনের দিক থেকে, কোনো বাধ্যবাধকতাই নেই এর—রামপ্রসাদ কিন্তু ভয়ে কাঁটা হয়ে গেল মুচলেখা লিখে দেওয়ার নাম শুনে।

 —দাও, দাদা—লেখো আগে।

 —এবার দয়া করুন দারোগাবাবু। আমি বরং এ গাঁ ছেড়ে চলে যাচ্ছি, বলুন আপনি—

 —কোথায় যাবে?

 —পাশের গ্রামে বর্দ্ধমবেড়ে চলে যাই। আপনি যা বলেন।

 —সেই মেয়েটিকে একেবারে ছেড়ে চলে যেতে হবে—

 —আপনার যা হুকুম।

 দারোগা আমার দিকে চেয়ে বললে—তাহোলে তাই কর। বছরখানেক এ গাঁ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাও। মেয়েটির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবে না আর, এই বলে দিচ্ছি।

 —যে আজ্ঞে—

 —ক’দিনের মধ্যে যাবে?

 —পনেরোটা দিন সময় দিন আমায়।

 —তাই দিলাম। যাও, এখন চলে যাও।

 দারোগাবাবু আমার বাড়ী চা খেতে এসে বললে—কেমন