বাবাঃ, গাঁয়ের গেজেট কি আর সাথে বলে! তা কি বকবে শুধুই, না, খেতে—টেতে দেবে আজ?
সুরবালা আর এক দফা সদুপদেশ বর্ষণ করলে খাওয়ার সময়। গ্রামের মধ্যে কে কি করছে সে সব কথার মধ্যে আমার দরকার কি? নিজের কাজ ডাক্তারি, তা নিয়ে আমি থাকতেই তো পারি। সব কাজের মধ্যে মোড়লি না করলে কি আমার ভাত হজম হয় না?
আমি ধীরভাবে বললাম—তা বলে গাঁয়ে যে যা খুশি করবে?
—করুক গে তোমার কি? যে পাপ করবে, ঈশ্বর তার বিচার করবেন। তোমার সর্দ্দারি করতে যাওয়ার কি মানে? অপরের পাপের জন্যে তোমার তো দায়ী হতে হবে না।
—কি জানো, তুমি মেয়েমানুষের মত বলছো। আমি এখন এ গাঁয়ে পল্লীমঙ্গল সমিতির সেক্রেটারি, পাঁচজনে মানে চেনে। এ আমি না দেখলে কে দেখবে বল। গ্রামের নীতির জন্যে আমি দায়ী নিশ্চয়ই।
—বেশ, ভালো কথায় বুঝিয়ে বলো না কে মানা করছে? আপমান করবার দরকার কি?
—বুঝিয়ে বলিনি? অনেক বলেছি। শুনতো যদি তবে আজ আমায় এ কাজ করতে হোত না।
সুরবালা যাই বলুক, সে মেয়েমানুষ, বোঝেই বা কি—আমি কিন্তু আত্মপ্রসাদ অনুভব করলাম সে রাত্রে। আমি থাকতে এ গ্রামে ও সব ঘটতে দেবো না। একটা পুরুষমানুষ ভুলিয়ে একটা সরলা মেয়ের সর্ব্বনাশ করবে, এ আমি কখনই হোতে দিতে পারি নে।