সুরবালা এখানে আমার সঙ্গে এক মত নয়। সে বলে রামপ্রসাদের দোষ নেই। শান্তিই ওকে ভুলিয়েছে। অসম্ভব কথা, শান্তিকে আমি এতটুকু বেলা থেকে দেখে আসছি, মাখম মাস্টারের স্কুলে যখন পড়ি, শান্তি তখন ছোট্ট শাড়ি পরে সাজি হাতে পাঠশালার বাগানে ফুল তুলতে আসতো, আঁচলে বেঁধে গুগলি কুড়িয়ে নিয়ে যেতো নাক-ছেঁদা গিন্নিদের ডোবা থেকে —সেই শান্তি কাউকে ভোলাতে পারে।
সকালে উঠে আমি দূরগ্রামে ডাকে চলে গেলাম। ফিরে আসতেই সুরবালা বললে—আজ খুব কাণ্ড হয়ে গেল—কি হাঙ্গামাই তুমি বাধিয়েছ!
—কি হোল?
—শান্তি ঠাকুরঝি সকালে এসে হাজির। কেঁদে কেটে মাথা কুটে সকালবেলা সে এক কাণ্ডই বাধালো! আমার পায়ে ধরে সে কি কান্না, বলে—শশাঙ্কদা এ কি করলেন? আমি তাঁকে বিশ্বাস করে সব কথা বললাম, অথচ তিনি—
সুরবালা সব কথা জানে না, আমি বললাম—ওর ভুল। ওর কোনো গোপন কথা সেখানে প্রকাশ করিনি—
সুরবালা অবাক হয়ে বললে—করনি?
—কক্ষনো না।
সুরবালা আশ্বস্ত হওয়ার সুরে বললে—যাক এ কথা আমি কালই বলবো শান্তিকে।
আমি রেগে বললাম—ওকে আর বাড়ী ঢুকতে দিও না—
—ছিঃ ছিঃ, মানুষের ওপর অত কড়া হতে নেই। তুমি তাকেকিছু বলতে পারো তোমার বাড়ী এলে?