পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈ জল
৩০

 শান্তি একটু হেসে বললে—আমার একটা কথা রাখবে শশাঙ্কদা? তোমার ডাক্তারখানা থেকে আমায় একটু বিষ দিতে পারো?

 আমার বড় রাগ হয়ে গেল। বললাম—ঘোর-পেঁচ কথা আমি ভালবাসিনে, যা বলবে সামনা সামনি বলো। ঝাঁজের সঙ্গে জবাব দিলাম—কোন্ কথা থেকে এ কোন্ কথার আমদানি করলে? বিষ কি হবে? খেয়ে মরবে তো? তা অনেক রকম উপায় আছে মরবার। আমায় এর জন্যে দায়ী করতে চাও কেন জিজ্ঞেস করি? ভক্তি আছে বলে বুঝি?

 শান্তি বলেল—ঠিক বলেছ দাদা। আর তোমাদের বোঝা হয়ে থাকবো না। দাঁড়াও, একটু পায়ের ধুলো দ্যাও দাদা—

 কথা শেষ করেই শান্তি আমার পায়ের উপর উপুড় হয়ে পড়ে দুহাতে পায়ের ধুলো নিয়ে মাথায় দিলে। মনে হোল, ও কাঁদছে, কারণ কথার শেষের দিকে ওর গলা কেঁপে গেল যেন।

 পায়ের ধুলো নিয়ে মাথা তুলেই ও আর কোন কথাটি না বলে চলে যেতে উদ্যত হোল।

 আমার তখন রাগটা কেটে গিয়ে একটু ভয় হয়েছে। মেয়ে মানুষকে বিশ্বাস নেই, সত্য সত্য মরবে না কি রে বাবা!

 বললাম—দাঁড়াও, একটা কথা আছে শান্তি!

 শান্তি ফিরে দাঁড়িয়ে ঘাড় বেঁকিয়ে বললে—কি?

 —সত্যি সত্যি মরো না যেন তাই বলে।

 —তা ছাড়া আমার কি আছে করবার? সমাজের পথ