পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩
অথৈ জল

 —তা হোলে আমার ব্যবস্থা আমি নিজেই করি, তুমি যখন কিছুই করবে না—

 শান্তি চলে গেল বা ওকে আমি যেতেই দিলাম। আর বেশিক্ষণ ওর সঙ্গে এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলা আমার উচিত হবে না। হয় তো কেউ দেখে ফেলবে, তখন পাঁচজনে পাঁচ কথা বলতে শুরু করে দেবে, শান্তির যা সুযশ এ গাঁয়ে। বাড়ি ফিরে সুরবালাকে কথাটা এবার আর বললাম না কি ভেবে, কিন্তু সারা রাত ভালো ঘুম হোল না। সত্যি শান্তির উপায় কি? একা মেয়েমানুষ, কি করে এ দারুণ অপযশ থেকে নিজেকে রক্ষা করবে,—আর হয়তো ছয়মাস পরে সে বিপদের দিন ওর জীবনে এসে পড়বেই। আমার দ্বারা তখন সাহায্য হতে পারে, তার পূর্ব্বে নয়।

 কিন্তু সকালবেলা যা কানে গেল তার জন্যে আমি প্রস্তুত ছিলাম না।

 বেলা সাড়ে আটটা। সবে চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়েছি, এমন সময় সনাতনদা আর মুখুজো জ্যাঠামশায়ের বড় ছেলে হারান হন্তদন্ত হয়ে হাজির। ওদের চেহারা দেখে আমি বুঝলাম, একটা কিছু ঘটেছে! আমি কিছু বলবার পূর্ব্বেই সনাতন বললে—এদিকে শুনেছ কাণ্ড?

 —কি ব্যাপার?

 শান্তি আর রামপ্রসাদ দুজনে কাল ভেগেছে।

 —কে বললে? কোথায় ভাগলো?

 —নাকছেঁদা গিন্নি ভোরবেলায় পুজোর ফুল তুলতে