পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈ জল
৩৬

 রামালাল ঘোষ হেসে বললে—বাবু, তা হবে না। অপারেশনের রুগী।

 অপ্রসন্ন মুখে বললাম—কি অপারেশন? কি হয়েছে?

 —একজনের ফোঁড়া, একজনের হুইটলো।

 —দূর, ওসব আবার অপারেশন? নরুন দিয়ে চেরা—তুমি আমায় ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলে। জলদি—মেঘ আবার জমে আসছে। ডাক দাও সব জলদি জলদি—মেঘ আবার জমে আসছে। একটু চা খাওয়াবে?

 —আজ্ঞে হ্যাঁ, বড় স্টোভটা তো জ্বালতেই হবে, জল গরমের জন্যে। আগে চা করে দিই।

 এই সময় বাজারের বড় ব্যবসাদার জগন্নাথ কুণ্ডু এসে নমস্কার করে বললে— ডাক্তারবাবু, ভাল তো?

 —নিশ্চয়ই, নয়তো এই দুর্যোগে কাজে আসি?

 —একটা কথা। কিছু চাঁদা দিতে হবে। সামনের ঝুলনের দিন এখানে ঢপ দেবো ভাবছি।

 —তা বেশ। কোথাকার ঢপ?

 এখনো কিছু ঠিক করি নি। কেষ্টনগরের রাধারানী, রানাঘাটের গোলাপী কিংবা নদে শান্তিপুরের—

 —আচ্ছা, আচ্ছা, যা হয় করবেন, আমার যা ক্ষমতা হয় দেবো নিশ্চয়ই। এখন কাজের ভিড়ের সময় বসে বসে বাজে গল্প করবার অবসর নেই আমার।

 জগন্নাথ কুণ্ডু যাবার সময় বলে গেল—ওদিকে গিয়ে একবার কাজকর্ম দেখবেন টেকবেন, আপনারা দাঁড়িয়ে হুকুম দিলে সামরা কত উৎসাহ পাই।