না। পাড়াগাঁয় সেটা নিয়ম নয়। কোনো ক্রিয়াকর্ম্মের সময় পাড়ার বিশিষ্ট লোকদের ডেকে কি করা উচিত বা অনুচিত সে সম্বন্ধে পরামর্শ করতে হয়, তাদের দিয়ে ভোজ্যদ্রব্যের তালিকা করাতে হয়। সে সব কিছুই না। শুকনো নেমন্তন্ন করে গেল তাঁর মেজ জামাই। তাও অন্নপ্রাশনের দিন সকালে। একটা কথাও তার আগে আমায় কেউ বললে না।
সদাতনদা বললে—এর শোধ নিতে হবে ভায়া। আমরা সবাই তোমার দলে। তুমি যদি বল, এপাড়ার একটি প্রাণীও মুখুজ্যে বাড়ী পাত পাড়বে না।
—আমি তা বলচি নে। সবাই খাবে মুখুজ্যে জ্যাঠার বাড়ী।
সনাতনদা অবাক হয়ে বললে—এই অপমানের পরেও তুমি যাবে? না, না, তা আমরা হোতে দেবো না। আমার উপর ভার দ্যাও, দ্যাখো কোথাকার জল কোথায় মারি। কে না জানে ওঁর বংশে গোয়ালা অপবাদ আছে? ওঁর মেজ খুড়ী বিধবা হোয়ে ওই নিবারণ ঘোষের কাকা অধর ঘোষের সঙ্গে ধরা পড়েন নি?
—আঃ, কি বলচ সনাতনদা? ওসব মুখে উচ্চারণ কোরো না। আর কেউ যদি নাও যায়—আমি খেতে যাবো।
—বেশ, তোমার ইচ্ছে। গাঁয়ের লোক কিন্তু তোমার অপমানে খেপে উঠেছে।