পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
৪৪

 —তাদের অসীম ধন্যবাদ। বাড়ী গিয়ে ডাবের জল খেয়ে ঠাণ্ডা হোতে বলো।

 নিমন্ত্রণের আসরে ভিন্নগ্রামের বহুলোকের সমাগম। দুতিনটি চাকর অভ্যাগতদের পদধৌত করবার জন্যে ব্যস্ত হয়ে ছুটোছুটি করচে। মস্তবড় জোড়া সতরঞ্চি পড়েচে চণ্ডীমণ্ডপের দাওয়ায়। উঠোনজোড়া নীল সামিয়ানা টাঙানো। একপাশে দুটি নতুন জলভরতিত জালা, জালার মুখে পেতলের ঘটি, জালার পাশে একরাশ মাটির গেলাস।

 আমায় ঢুকতে দেখে মুখুজ্যে জ্যাঠামশায় কেমন একটু অবাক হয়ে গেলেন। তখুনি সামলে নিয়ে আমার দিকে চেয়ে বললেন—আরে শশাঙ্ক যে! এসো এসো—

 —একটু দেরি হয়ে গেল জ্যাঠাবাবু। রুগীপত্তর দেখে আসতে—

 —ঠিক ঠিক, তোমার পশার আজকাল—

 —আচ্ছা, আমি একবার রান্নাবান্নার দিকে দেখে আসি কি রকম হোল।

 —যাও যাও, তোমাদেরই তো কাজ বাবা।

 সেই থেকে বিষম খাটুনি শুরু করলাম। মাছের টুকরো কতবড় করে কাটা উচিত, চাটনিতে গুড় পড়বে না চিনি, বাইরের অভ্যাগতদের নিজের হাতে জলযোগ করানো, খাওয়ার জায়গা করা, বালতি হাতে মাছের কালিয়া ও পায়েস পরিবেশন, আবার এরই মধ্যে ভোজসভার এক গেঁয়ো