এই সব ছোট গানের আসরে ছোটখাটো ব্যবসাদারদের সঙ্গে দেমাকে নাক উঁচু করে বসেছে। আমায় সে চেনে, একবার ওর ছোট নাতীর ঘুংড়ি কাসির চিকিৎসা করেছিলাম এই মঙ্গলগঞ্জে আর বারে। ওর ওপাশে বসেচে কুঁদিপুর গ্রামের আবদুল হাকিম চৌধুরা, ঐ ইউনিয়নের প্রেসিডেণ্ট ও লোকালবোর্ডের মেম্বার। আবদুল হামিদের বাড়ী একচল্লিশ গোলা ধান, এ অঞ্চলের বড় ধেনো মহাজন, দশ-পনেরোখানা গ্রামের কৃষক সব আবদুল হানিদের খাতক প্রজা। তার পাশে বসে আছে কলাধরপুরের প্রহ্লাদ সাধুখাঁ, জাতে কলু, তিনপুরুষে ব্যবসাদার। হাতে আগে যত টাকা ছিল, এখন তত নেই, সরষের ব্যবসায়ে ক’বার ধরে লোকসান দিয়ে অনেক কমে গিয়েচে। প্রহ্লাদ সাধুখাঁর ভাই নরহরি সাধুখাঁ তার ডানপাশেই বসেচে। নরহরি এই মঙ্গলগঞ্জে ধানপাটের আড়তদারি করে।
গোবিন্দ দাঁ পকেট থেকে একটি সিগারেট বার করে, বললে—আসুন ডাক্তারবাবু!
—ভাল আছেন?
—বেশ আছি। আপনি?
—মন্দ নয়।
—এ পাড়াগাঁ ছেড়ে আর কোথাও জায়গা পেলেন না! কতবার বললাম।
—আপনাদের মত বড়লোক তো নই। অন্য জায়গায় গেলে চলতে পারে কি? কি রকম চলচে আপনাদের ব্যবসা?
—আগের মত নেই, তবুও এরকম মন্দ নয়।