আমি প্রথমটা ও মেয়েটির দিকে চেয়ে দেখিনি। এখন খুব কাছে আসতে ভাল করে চেয়ে দেখলাম যে বেশ দেখতে। রং ফরসা নয় বটে কিন্তু একটি অপূর্ব্ব কমনীয়তা ওর সারা দেহে। ভারী চমৎকার বাঁধুনি শরীরের। যতবার আমার কাছে এল, ওর ঢল ঢল লাবণ্য ভরা মুখ ও ডাগর কালো চোখ দুটি আমার কাছে বিস্ময়ের বস্তু হয়ে উঠতে লাগলো। গলার সুরও কি সুন্দর, অমন কণ্ঠস্বর আমি কখনো শুনিনি কোনো মেয়ের।
আমাদের গ্রামে শান্তি বেশ সুন্দরী মেয়ে বলে গণ্য, কিন্তু শান্তি এর পায়ের নখের কাছে দাঁড়াতে পারে না।
আবার মেয়েটি ঠিক আমার সামনে এসেই গান গাইতে লাগলো। আমার দিকে চায়, আবার লজ্জায় মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে নেয়, আবার আমার দিকে চায়—সে এক অপূর্ব্ব ভঙ্গি। আমার মনে হোল, এখনো ব্যবসাদারি শেখেনি মেয়েটি শুধু অন্য নর্ত্তকীটির শিক্ষায় ও এমনি করচে। বোধ হয় তাকে ভয় করেও চলতে হয়।
হঠাৎ কখন পকেটে হাত দিয়ে দুটি টাকা বার করে আমি সলজ্জ ও সকুণ্ঠভাবে মেয়েটির সামনে রাখলাম। মেয়েটি আমায় প্রণাম জানিয়ে টাকা দুটি তুলে নিলে।
গোবিন্দ দাঁ ও আবদুল হামিদ চৌধুরী একসঙ্গে বলে উঠলো—বলিহারি!
আরও দুবার মেয়েটি আমার কাছে ঘুরে ঘুরে গেল। আমি দুবারই তাকে টাকা দেবার জন্যে তুলেও আবার পকেটে ফেললাম। কেমন যেন লজ্জা করতে লাগলো, দিতে পারলাম না পাছে