পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৯
অথৈজল

কেমন দরের লোক এই থেকেই নির্দ্দিষ্ট হয়ে যায়। আমি সবই জানি, কিন্তু চুপ করে রইলাম। এর কারণ আছে। আমি একটা পরীক্ষা করতে চাই।

 এ সময় নেপাল প্রামাণিক এসে হাজির হোল।

 বললে—আজ আমার ওখানে একটু চা খাবেন ডাক্তারবাবু।

 —তোমার ওখানে সেদিন চা তো খেয়েছি—আজ আমার ডাক্তারখানায় বরং তুমি আর আবদুল হামিদ চা খেও।

 গোবিন্দ দাঁ বললে—আমি বুঝি বাদ যাবো?

 —বাদ যাবে কেন? চলো আমার সঙ্গে।

 —তা হোলে আমার বাড়িতে আপনি রাতে পায়ের ধুলো দেবেন বলুন।

 —এখন সে কথা বলতে পারিনে। কত রাতে আসর ভাঙ্গবে, কে জানে?

 —সমস্ত রাত দেখবেন?

 —দেখি। ঠিক বলতে পারিনে।

 আবার মেয়েটি ঘুরে ঘুরে আমার সামনে এসেচে। কি জানি ওর মুখে কি আছে, আমি যতবার দেখছি, প্রত্যেকবারেই, নতুন কিছু, অপূর্ব্ব কিছু দেখেচি জীবনে, কিন্তু অমন মুখ অমন চোখ আমি কারো দেখেচি বলে মনে তো হয় না।

 আমি এবারেও প্যালা দিলাম না।

 কিন্তু একবার ওর মুখের দিকে চাইতেই দেখি ও আমার মুখের দিকেই চেয়ে আছে।

 আমার অত্যন্ত আনন্দ হোল হঠাৎ। অকারণ আনন্দ।