পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
৮০

জিঙ্কের পিপের সোল এজেণ্ট—এখানে আর আমরা কেন? ওঠো আঙুল হামিদ—

 সত্যিই ওরা চলে গেল। আমি মেয়েটির মুখের দিকে চাইলাম। দুটি চোখের সলজ্জ চাউনি আমার মুখের দিকে স্থাপিত। এভাবে আমি একা কোন মেয়ের সঙ্গে মিশতে অভ্যস্থ নই, আমি যেন ঘেমে উঠলাম। তার উপরে অন্য কোনো মেয়ে নয়, যে মেয়েটি কাল থেকে আমার একঘেয়ে জীবনে সম্পূর্ণ নতুনের স্বাদ এনে দিয়েচে, সেই মেয়েটি। হঠাৎ আমি নিজেকে দৃঢ় করে নিলাম। আমি না ডাক্তার? আমার গলা কাঁপবে একটি বালিকার সঙ্গে চিকিৎসক হিসেবে কথাবার্ত্তা বলতে?

 বললাম—কি হয়েচে তোমার?

 মেয়েটি আমার মুখের দিকে স্থিরদৃষ্টিতে চেয়ে বললে—আপনি ডাক্তারবাবু?

 অদ্ভুত প্রশ্ন। এতটুকু মেয়ের মুখে। গম্ভীর মুখে বলবার চেষ্টা করলাম—তবে এখানে কি জন্য এসেচ? দেখতেই তো পাচ্চ।

 আশ্চর্য্যের উপর আশ্চর্য। মেয়েটি ফিক্ করে হেসে ফেলেন পরক্ষণেই লজ্জায় মুখখানি নীচু করে আঁচল চাপা দিলে—আঁচল-চাপা মুখ আমার দিকে তুলে আবার ফিক্ করে হেসে উঠলো। সে এক অদ্ভূত ভঙ্গি, সে ভঙ্গির অপূর্ব্ব লাবণ্য আমার বর্ণনা করবার শক্তি নেই। আমার বুদ্ধি যেন লোপ পাবার উপক্রম হোল—এমন ধরনের মেয়ে আমি