—‘পান্না’ কেন, আমার ভাল নামে ডাকুন না? সু-ধী-রা বালা—
—ওর চেয়ে পান্না ভালো লাগে—সত্যি বলচি।
—আমিও সত্যি বলচি আপনাকে আজ রাত্রে—
এই পর্য্যন্ত বলেই কি একটা বলবার মুখে হঠাৎ থেমে গিয়ে ও সলজ্জ হেসে মুখ নিচু করে থেকে চুপি চুপি কি কতকগুলো কথা আপনা আপনি বলে গেল।
—কি বললে?
—বলচি এই গিয়ে—আপনাকে আজ রাত্তিরে-এ-এ—
—আঃ, লজ্জায় তো ভেঙে পড়লে। বলো না কি?
—আমার লজ্জা করে না বুঝি! আমি যাই—এগিয়ে দিন।
আমি উঠলাম। আমার সম্বিৎ ফিরে এসেচে। আমি চিকিৎসক, আমারই ডাক্তারখানায় সমাগত একটি রোগিণীর সঙ্গে রাতদুপুরে এমন বিশ্রম্ভালাপ শোভা পায় না আমার। পঁয়ত্রিশ বছর বয়েস হয়েছে! বিবাহিত ভদ্রলোক।
বললাম—চলো না, ওঠো। এগিয়ে দিয়ে আসি—
হরি ময়রার দোকান পর্য্যন্ত এসে দেখি আসরের দিকে তখনও মেলা লোকের ভিড়। কেউ পান বিড়ি খাচ্চে, কেউ জটলা করে গল্প করচে। স্থানীয় বাজারের লোকে এখনও এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্চে, পানবিড়ির দোকান এখনও খোলা।
পান্না নিজেই আমার দিকে চেয়ে সলজ্জ কুণ্ঠায় ভদ্রঘরের বধূটির মত বললে— আপনি যান, লোকের ভিড় রয়েছে। আপনাকে দেখতে পাবে।