পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৭
অথৈজল

কেবলই মনে পড়ে, তার সেই অদ্ভুত হাসি, সকুণ্ঠ চাউনি। লাবণ্যময়ী কথাটা বইয়ে পড়ে এসেছি এতদিন, ওকে দেখে এতদিন পরে বুঝলাম নারীর লাবণ্য কাকে বলে। কি যেন একটা ফেলে যাচ্ছি মঙ্গলগঞ্জের বারোয়ারি তলায়, যা ফেলে আমি কোথাও গিয়ে শান্তি পাবো না।

 মনে মনে একটা অদ্ভুত কল্পনা জাগলো।

 নিজেই অবাক হয়ে গেলাম এ ধরনের কল্পনার সম্ভাব্যতায়—আমার মনে এ ধরনের কল্পনার সম্ভাব্যতায়। ডাক্তারি ছেড়ে দিয়েছি, সংসার ছেড়ে দিয়েছি, পান্না যদি আমাকে চায় তবে ওকে নিয়ে চলে গিয়েছি সুদূর পশ্চিমে কোনো এক অজ্ঞাত ছোট শহরে। পান্নার সীমন্তে সিন্দূর, মুখে সেই হাসি··· ··· আমার সঙ্গে এক নির্জ্জন ছাদে··· ··· দুজনে মুখোমুখি··· ··· কেউ কোথাও নেই··· ··· কেউ আমাকে ডাক্তারবাবু বলে খাতির করবার নেই। এখানে আমার বংশগৌরব আমার সব স্বাধীনতা হরণ করেচে। ··· ···

 কিসের বংশগৌরব, কিসের যশমান?

 ওকে যদি পাই?

 হয়তো তা আকাশ-কুসুম! ও সব আলেয়ার আলো, হাতের মুঠোয় ধরা দেয় না কোনো দিন। পান্না আমার হবে, এ কথা ভাবতেই আমার সারা দেহমনে যেন বিদ্যুতের স্রোত বয়ে গেল। পান্না খাঁটি নারী, আমি এতদিন নারী দেখিনি। ওদের চিনতাম না। আজ বুঝলাম ওকে দেখে।

 পান্না আজ আমার ডাক্তারখানায় কেন এসেছিল? ওষুধ