পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৯
অথৈজল

কলকাতায়। তা হবে না, অমন ভাবে পান্নাকে আমি হারাতে রাজী নয়।

 বাড়ি এসে স্নান করে একটু মিছরির সরবৎ খেয়ে বৈঠকখানায় গিয়ে বসেছি, এমন সময় বড় মুখুজ্যের ছেলে হারান এসে বললে—শশাঙ্কদা, একবার আমাদের বাড়ি যেতে হচ্ছে—

 —কেন হে এত সকালে?

 —জামাই এসেচেন, একটু চা খাবে তাঁর সঙ্গে সকালে।

 —মাপ করো ভাই, কাল সারারাত ঘুমুই নি। মঙ্গলগঞ্জে শক্ত কেস্ ছিল—

 —ভালো কথা, হ্যাঁহে মঙ্গলগঞ্জে নাকি বারোয়ারিতে ভাল খেমটা নাচ হচ্চে, কে যেন বলছিল—

 আমার বুকের ভেতরটা যেন ধড়াস করে উঠলো। জিব শুকিয়ে গেল হঠাৎ। এর কারণ আর কিছু নয়, মঙ্গলগঞ্জের কথা উঠতেই পান্নার মুখ মনে পড়লো··· ··· ওর হাসি··· ··· সেই অপূর্ব্ব লীলায়িত ভঙ্গি মনে পড়ে গেল··· ···

 আমি সামলে নিয়ে বললাম—বারোয়ারি!—হাঁ, হচ্চে শুনেছি ··· ···

 হঠাৎ আমার মনে হোল খেমটা নাচ হচ্চে শুনে হারান যদি আজ আমার নৌকোতেই (কারণ আমি আজ যাবোই ঠিক করে ফেলেছি) মঙ্গলগঞ্জ যেতে চায় তবে সব মাটি। পান্নার সঙ্গে দেখা করার কোনো সুবিধে হবে না ও আপদের সামনে, এমন কি হয়তো, নাচের আসরেই যেতে পারবো না।