কথা বলিয়া আমার সময় নষ্ট করা তোমার মত জ্ঞানবান লোকের ভাল দেখায় না। তোমাকে যাহা যাহা বলিলাম, অগ্রে তাহা সম্পন্ন কর। পরে তোমার বক্তব্য প্রকাশ করিও।”
আমার কথা শুনিয়া আবদুল কিছুমাত্র লজ্জিত হইল না, বরং আমি যে তাহাকে জ্ঞানবান বলিয়াছি, তাহাতেই সে অত্যন্ত আনন্দিত হইয়াছিল এবং দ্বিরুক্তি না করিয়া হৃষ্টচিত্তে আমার আদেশ পালনে নিযুক্ত হইল।
আমি তখন পুনরায় ফকিরের মৃতদেহের নিকট যাইলাম এবং আর একবার বিশেষ করিয়া সেই দেহ পরীক্ষা করিলাম। লাস্টী তন্ন তন্ন করিয়া পরীক্ষা করিবার পর ফকিরের কুটীরখানি পুঙ্খানুপুঙ্ক্ষরূপে দেখিতে লাগিলাম। কুটীরের প্রত্যেক স্থান, প্রত্যেক কোণ, প্রত্যেক সামান্য গহ্বর, যেখানে যাহা কিছু ছিল, সমস্তই অতি মনোযোগের সহিত দেখিতে লাগিলাম।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
ক্রমে সন্ধ্যা হইয়া আসিল। শীতকালের বেলা-পাঁচটা বাজিতে না বাজিতেই অন্ধকার হইল। ঘরে ঘরে আলো জ্বলিল, চারিদিকে শঙ্খধ্বনি হইতে লাগিল, দুই একটী করিয়া অগণন নক্ষত্ররাজি আকাশ-পথে দেখা দিল; দিবাভাগে সূর্য্যের ভয়ে তাহারা লুকাইয়া ছিল, এখন সূর্য্যের অদর্শনে তাহাদের প্রাণে যেন স্ফূর্ত্তি হইল, আহ্লদে তাহাদের সর্ব্বাঙ্গ লাবণ্যময় হইয়া