পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অদ্ভুত ফকির।
২৩

উঠিল। তখন তাহারা আবেগভরে নাচিতে নাচিতে নিজ নিজ পথে ধাবিত হইতে লাগিল।

 গৌরীবাবুর এক চাকর কুটীরে একটা আলো আনিল এবং অপর লোকের সাহায্যে ফকিরের মৃতদেহ কুটীর হইতে বাহির করিয়া একখানি খাটের উপর রাখিল। অবিলম্বেই পরীক্ষার জন্য উহা সরকারী ডাক্তারের নিকট নীত হইল।

 ফকিরের মৃতদেহ স্থানান্তরিত হইবার পর আমি যেমন কুটীর হইতে বাহির হইব, অমনি কুটীরের একটা বেড়ার অন্তরালে একটী সামান্য গহ্বর দৃষ্ট হইল। গহ্বরটী এরূপভাবে ছিল যে, সহজে কেহ উহা দেখিতে পাইত না। আমি পূর্ব্বে কুটীরখানি তন্ন তন্ন করিয়া সন্ধান করিয়াছিলাম বটে, কিন্তু গহ্বরটী তখন আমার দৃষ্টিগোচর হয় নাই।

 কুটীরের মধ্যে আমি একাই ছিলাম। আবদুল ও গৌরীবাবু বাহিরে আমার অপেক্ষা করিতেছিল। গৌরীবাবুর লোকেরা ফকিরের মৃতদেহ লইয়া গিয়াছিল। দুইজন কনষ্টেবলও তাহাদের সঙ্গে ছিল।

 আমি কোন শব্দ না করিয়া ধীরে ধীরে সেই গহ্বরের নিকট গেলাম। দেখিলাম, গহ্বরের মধ্যে একটা পিতলের লোটা ও একটা ক্ষুদ্র মাটীর সরা। লোটায় খানিক জল ছিল, সরাখানির ভিতরেও কি এক প্রকার তরল পদার্থ-বর্ণ ধূসর—কি যে ছিল, তখন কিন্তু বুঝিতে পারিলাম না। কিছুক্ষণ চিন্তা করিলাম, ভাবিলাম, গৌরীবাবুকে দেখাইয়া জিজ্ঞাসা করি। কিন্তু কি জানি কেন সাহস হইল না। মনে হইল, গৌরীবাবুকে বলিলে অপকার ভিন্ন উপকার হইবে না।