পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অদ্ভুত ফকির।
২৫

 আমার কথা শুনিয়া গৌরীশঙ্কর দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন। বলিলেন, “সেই কথা বলিবার জন্যই ত আমার এত আগ্রহ। আপনি বিচক্ষণ ব্যক্তি, তাহাতে সে কথা শুনিয়া নিশ্চয়ই অনেক সাহায্য পাইবেন; কিন্তু কথা অনেক—আপনি যদি বিরক্ত না হন তবেই বলিতে পারি।”

 আমি মনে মনে বিরক্ত হইলাম। ভাবিলাম, ইনিও যদি আবদুলের মত অল্পভাষী হন, তাহা হইলেই সর্ব্বনাশ! প্রকাশ্যে বলিলাম, “যত অল্প কথায় বলতে পারেন ততই মঙ্গল। সকল কথা অল্পে বলাই বুদ্ধিমানের—

 আমায় বাধা দিয়া গৌরী বাবু বলিয়া উঠিলেন, “নিশ্চয়ই! আমিও অতি অল্প কথায় বলিতেছি।”

 এই বলিয়া গৌরী বাবু কি ভাবিয়া একবার আমার মুখের দিকে চাহিলেন। পরে বলিলেন,—“কুড়ি বৎসর পূর্ব্বে এইস্থানে নীলরতন নামে এক প্রৌঢ় বাস করিতেন। তাঁহার যমজ পুত্র ছিল। একজনের নাম গৌরীশঙ্কর অপরের নাম হরশঙ্কর। যে সময়ের কথা বলিতেছি, তখন উভয়ের বয়স একুশ বৎসর। কোন কারণে দুই ভ্রাতার মধ্যে ভয়ানক বিবাদ হয়। তাহাদের জমীদারীর অবস্থা উত্তরোত্তর হীন হওয়ায় উভয়েই আপন আপন হস্তে উহার ভার গ্রহণের আকাঙ্ক্ষায় পিতার নিকট আবেদন করে। নীলরতন তাহাদের আবেদন সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করিলেন। বলিলেন, যতকাল তিনি জীবিত থাকিবেন, ততকাল জমীদারীর ভার স্বহস্তেই রাখিবেন,—কখনও হস্তান্তরিত করিবেন না। এই বিষয় লইয়া তিনজনে মহা কলহ হইল। অবশেষে অনেক বাদানুবাদের পর এই স্থির হইল যে, নীলয়তন উভয় পুত্রকেই