পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।

 আমরা যথাস্থানে উপবেশন করিলে পর, গৌরীশঙ্কর কহিলেন, “দুই মাস পূর্ব্বে এক ফকির আমার আলয়ে উপস্থিত হন। এ পর্যন্ত তিনি কোথাও স্থায়ী হন নাই; দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিয়া জীবিকা উপার্জ্জন করিতেন এবং অবশিষ্ট সময় কোন বৃক্ষতলে কি নদীতটে বসিয়া ঈশ্বরোপাসনায় নিযুক্ত থাকিতেন। তাঁহার প্রকৃত নাম কি বলিতে পারি না, কিন্তু সাধারণ তাঁহাকে পূর্ণানন্দ স্বামী বলিয়া সম্বোধন করিতেন। তাঁহার ধর্ম্মজ্ঞান ও ধর্মকথা শুনিয়া আমি আশ্চর্ষান্বিত হইলাম। তিনি একজন বৈদান্তিক পণ্ডিত, চারিখানি বেদ তাঁহার কণ্ঠস্থ বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। তাঁহাকে সিদ্ধপুরুষ ভাবিয়া আমি তাঁহাকে এইখানে কিছুদিন বাস করিতে অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি প্রথমতঃ স্বীকৃত হইলেন না। বলিলেন, তিনি সন্ন্যাসী, বহুদিন সংসারাশ্রম ত্যাগ করিয়াছেন আর সংসারশ্রমে প্রবেশ করিতে ইচ্ছা নাই। তাঁহার কথা শুনিয়া আমার বড় কষ্ট হইল। তখন আমার অবস্থা বড় শোচনীয় হইয়াছিল। আমি ঋণগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছিলাম, মাঠে শস্য উৎপন্ন হইত না, কৃষকদিগের নিকট হইতে রীতিমত খাজনা আদায় হইত না। নানা উপায় উদ্ভাবন করিয়াও আমি অবস্থা পরিবর্ত্তন করিতে পারি নাই। সেই জন্য ফকিরকে দেখিয়া আমার দৃঢ়বিশ্বাস হইয়াছিল যে, তিনিই আমাকে সেই আসন্ন বিপদ হইতে উদ্ধার করিতে পারিবেন। আমি তখন তাঁহাকে