পাতা:অদ্ভুত ভিখারী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
দারােগার দপ্তর, ১৪৪ সংখ্যা।

ডাকে দিতে বিলম্ব করে। সেই জন্যই তোমার স্ত্রী যথাসময়ে তোমার পত্র পান নাই।

 আমি নরেন্দ্র বাবুকে এই কথা বলিলে আমার বন্ধু বলিলেন, “ঠিক কথা! এ বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই। এখন আমার একটী কথা আছে। যদি পুলিস অনুগ্রহ করিয়া এই সম্বন্ধে আর কোন গোলযোগ না করিতে স্বীকৃত হয়, তাহা হইলে তুমিও আর কখনও ভিক্ষুকের কার্য্য করিতে পারিবে না। ছদ্মবেশ ধারণ করিয়া ভিক্ষুকতা দ্বারা অর্থ উপার্জ্জন করিতে চিরকালের জন্য বঞ্চিত হইলে।”

 আমি আসামীকে লক্ষ্য করিয়া কহিলাম, “নরেন্দ্র বাবু! আমি আপনাকে মুক্তি দিলাম। এ বিষয়ে আর কোন গোলযোগ হইবে না। আপনি ভদ্রলোক, সামান্য ভ্রমের জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করিলেন। এমন কি, যদি এই ভয়ানক রহস্যভেদ এত সহজে না হইত, তাহা হইলে আপনাকে হয়ত জীবন পর্য্যন্ত বিসর্জ্জন দিতে হইত। আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে এই বিষয় ইতিপূর্ব্বে জানাইতেন, তাহা হইলে কখনও এরূপ গোলযোগ ঘটিত না। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এরূপ গোপনীয় বিষয় থাকা উচিত নহে। আপনি মুক্তি পাইলেন, অদ্য আপনাকে এখন আর একটী কার্য্য করিতে হইবে। আপনি বাটী প্রত্যাগমন করিয়া আপনার স্ত্রীকে এই বিষয় সত্য করিয়া বলিবেন,—ইহাই আমার আন্তরিক অভিপ্রায়।”

 “আপনার কথা শিরোধার্য। কিন্তু জানিবেন যে, এ সকল কথা বলিতে আমার যৎপরোনাস্তি অপমান বোধ করিতে হইবে।”