পাতা:অদ্ভুত ভিখারী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারােগার দপ্তর, ১৪৪ সংখ্যা।

 মাতুলালয় হইতে প্রত্যাগমন করিবার সময় নরেন্দ্র বাবুর স্ত্রী ও পুত্র ঐ গুলিখানার নিকট দিয়া আসিতেছিলেন। ঐ গুলির আড্ডার সম্মুখে ঘোড়াদিগের জলপান করাইবার একটী স্থান আছে। গাড়োয়ান ঘোড়াকে জলপান করাইবার জন্য সেইখানে দাঁড় করায়। গাড়ীর দরজা কিছু খোলা ছিল। নরেন্দ্রবাবুর স্ত্রী এই সময় হঠাৎ ঐ দ্বিতল গৃহের উপরের জানালার দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন; অমনি তিনি তাঁহার স্বামিকে জানালার নিকট দেখিতে পাইলেন। এরূপ সময়ে এরূপ স্থানে তাঁহার স্বামীকে দেখিয়া মনে করিলেন, কোন কার্য্যগতিকে হয় তো তাঁহার স্বামী সেইস্থানে আগমন করিয়াছেন, ও আরো মনে করিলেন, তিনি যদি জানিতে পারেন যে, তাঁহার স্ত্রী-পুত্র সেইসময় সেই স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন, ও তাঁহার কার্য্যও যদি শেষ হইয়া গিয়া থাকে, তাহা হইলে তিনি তাহাদিগের সহিত প্রত্যাগমন করিতে পারেন। মনে মনে এইরূপ ভাবিয়া তিনি সেই গাড়ির কোচম্যানকে তাঁহার পুত্রের দ্বারা বলাইলেন যে, সে ঐস্থানে গমন করিয়া তাঁহার স্বামীকে তাঁহার নিকট ডাকিয়া দেয়। কোচম্যান তাঁহার আদেশমত ঐ বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিবার চেষ্টা করিল, কিন্তু সেই গুলিখানার আড্ডাধারী কোনমতেই তাহাকে উপরে উঠিতে দিল না। কোচম্যান প্রত্যাগমন করিয়া সমস্ত কথা তাঁহাকে কহিল, আরো কহিল, “আপনি বোধ হয় অবগত নহেন যে, এই স্থানটা কি? ইহা একটী গুলির আড্ডা। এই স্থানে কোন সম্ভ্রান্ত লোক আগমন করে না। ঐ প্রদেশের যত চোর বদ্‌মায়েসের ইহা একটী প্রধান আড্ডা, ইহাতে নিত্য নিত্য যে কতরূপ কুকার্য্য সম্পন্ন হইয়া থাকে, তাহার ইয়ত্তা নাই।”