পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>bo সীতা সংযমনী ; হে জগন্নাথ! আপনি নিস্কৃতি, সীতা তামসী ; আপনি বরুণ, জানকী ভাগধী ; আপনি পবন, সীতা সদাগতি ; আপনি কুবের, সীতা সৰ্পসম্পং ; আপনি লোকসংহারক রুদ্র, সীতা রুদ্রাণী। প্রভু হে ! অধিক কি বলিব ? লোকে পশ্চিক যাহা কিছু আছে, তৎসমস্তই ভগবতী জানকী এবং পুরুষবাচক যাহা কিছু দেখিতে পাওয়া যায়, তৎসমুদায়ই আপনি। অতএব হে দেব ! এই ত্রিজগতে আপনাদিগের দুই জন ব্যতীত আর কিছুই নাই । আপনার সম্বন্ধ বলে উদিত মায়াকেই “অব্যাকৃত” বলা যায়। ঐ মায়া হইতে বুদ্ধিতত্ত্ব ; বুদ্ধিতত্ত্ব হইতে অহঙ্কার ; অহঙ্কার হইতে সৰ্পকার্য্যাত্মক লিঙ্গদেহ* । প্রাজ্ঞব্যক্তিরা ঐ অহঙ্কার, বুদ্ধি, পঞ্চপ্রাণ, পঞ্চতন্মাত্র ও পঞ্চ জ্ঞানেলিয়কে জন্মমৃত্যু-মুখাদিবিশিষ্ট "লিঙ্গদেহ’ বলিয়া নির্দেশ করিয়া থাকেন। ঐ লিঙ্গদেহসংস্কৃষ্ট আত্মাই জীব। ইহাই হিরণ্যগর্ভরূপে প্রতিভাত করিতেছেন. অনির্ব্বচনীয়া অনাদি অবিদ্যা সংসারকারণরূপ কুটস্থ ব্রহ্মের উপাধি। স্থূলদেহ, সুক্ষ লিঙ্গদেহ ও কারণ এই তিনটী উপাধিদ্বারা সংযুক্ত হইয়া আপনি জীবসংজ্ঞা ধারণ করেন এবং তাহ হইতে বিযুক্ত হইয়াই তুরীয় হইয়া থাকেন। হে রঘুশ্রেষ্ঠ ! জাগ্রং, স্বল্প ও স্বযুপ্তি অবস্থাতে জীব যে ষে কর্ম্ম করে, আপনি তৎসমস্তের বিলক্ষণ চিন্মাত্র-রূপ সাক্ষী ;—আপনিই কারণোপাধি। আপ নার হইতেই এই জগৎ উদ্ভূত হইয়াছে, আপনাতেই ইহা অধিষ্ঠিত রহিমাছে ; অন্তে আপনাতেই ইহা লগ্ন পাইবে ;—অতএব আপনিই সকলের মূল কারণ। ভ্রমবশত রজীতে সৰ্পজ্ঞানের ন্যায় আত্মাকে জীব ভাবিয়া লোকে সংসার প্রাপ্ত হইয় থাকে, কিন্তু সেই ভ্রম নিরাকৃত হইলে যখন তাহাদিগের ঠাঁহাতে পরমাত্ম জ্ঞান স্কুল, তখনই সমস্ত ভয়, সকল-দুঃখ দূর হইয়া যায়। আপনি চিন্মাত্র জ্যোতি-স্বরূপ ; সর্ব্বদেহে বর্ত্তমান অন্তঃকরণাদি বুদ্ধিসমূহ আপনা-কর্তৃক পরিচালিত হয়, অতএব আপনি অন্তর্য্যামী । অজ্ঞানবশত লোকে যেমন রজ্জ্বকে সৰ্প ৰলিয়া ভ্রম করিয়া থাকে, সেই মুঢ় ব্যক্তিরা আপনার স্বরূপ না জানিয়া আপনাতে এই সমগ্র বিশ্ব আরোপ করে ; কিন্তু আপনার স্বরূপ জ্ঞাত হইবামাত্র তাহাদিগের সেই

  • ०१७श्राज़ ७च९ ईछिद्रमकज चश्झांद्र रुश्दछ

উৎপন্ন, লিঙ্গ শরীর ঘটা দশটী পদার্থ “অহঙ্কার গমুপ্ত বলি লিঙ্গ দেহকে সংস্কারোৎপন্ন বলা হইল । অধ্যাক্স-রামায়ণ । ভ্রম দূরীভূত হইয়া যায়, অতএব সেই জ্ঞান সদা অভ্যাস করা উচিত । আপনার ঐপাদপদ্মে যাহার মনঃ প্রাণ সমর্পণ করিয়াছেন, তাহারা ক্রমে ক্রমে বিজ্ঞান লাভ করিয়া থাকেন; হে প্রভো ! তাহরাই একমাত্র মুক্তিভাজন। আমি আপনার ভক্তামুভক্তদিগের এবং তদীয় ভক্তদিগের কিঙ্কর ; অতএব আয়ার প্রতি অনুগ্রহ করুন;—নিজ মায়ায় আমাকে আর মুগ্ধ করিবেন না। ভগবন! মদীয় জনক ব্রহ্মা আপনার নাভি কমলে উদ্ভূত হইয়াছেন ; অতএব আমি আপনার পৌত্র ; হে রাঘব । এই নিতান্ত ভক্ত পৌত্রকে ত্রাণ করুন।” এইরূপে স্তব করিতে করিতে নারদের নয়নযুগল আনন্দাশ্র দ্বারা পরিপ্লত হইল। তিনি ঐরামকে বারবার প্রণাম করিয়া পুনর্ব্বার কহিলেন, “হে রঘুনাথ! পিতা ব্রহ্মা আমাকে আপনার নিকট প্রেরণ করিয়াছেন; রাবণের নিধনার্থ আপনি ভূমগুলে অবতীর্ণ হইয়াছেন । সম্প্রতি রাজা দশরথ রাজ্য রক্ষার্থ আপনাকে যৌবরাজ্যে অভিষেক করিবেন। প্রভো! আপনি রাজ্যখালনে আসক্ত হইলে রাবণ বধ হইবে না। ভূভার-হরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়া আপনি অবতার গ্রহণ করিয়াছেন। আপনি সত্যপ্রতিজ্ঞ ; অতএব সেই সত্য পালন করুন।” দেবর্ষি নারদের এই কথা শ্রবণে শ্রীরাম হাস্য করিয়া কহিলেন, “শুন নারদ ! আমি সকলই জানি । কোন দেশে, কোন কালে এমন কোন বিষয় আছে কি, যাহা আমি জানি না ? আমি যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছি, তাহ নিঃসংশয়ে পালন করিব। ভোগ দ্বারা রাক্ষসগণের প্রারব্ধ ক্ষয় হইলেই আমি অযুর-মণ্ডল-রূপ ভূভার হরণ করিব ; এজন্য ইহা সময় সাপেক্ষ । রাবণের বিনাশার্থ আমি আগামী কল্য মুনিবেশ ধারণপূর্বক দণ্ডকারণ্যে গমন করিয়া চতুর্দশ বৎসর কাল তথায় বাস করিব এবং সীতা উদ্ধারচ্ছলে দুষ্ট রাক্ষসকে সবংশে বিনাশ করিয়া আসিব ।" শ্রীরাম এইরূপে পূর্ব্বপ্রতিজ্ঞা রক্ষা করিতে প্রতিজ্ঞা করিলে, দেবৰি নারদ আনন্দিত মনে র্তাহাকে বারক্রয় প্রদক্ষিণ ও দণ্ডবং প্রণাম করিয়া তাহার নিকট বিদায় গ্রহণপূর্বক আকাশপথে প্রস্থান করিলেন । যিনি নিত্য ভক্তি সহকারে ঐরাম ও নারদের এই কথোপকথন শ্রাণ, পাঠ, অথবা স্মরণ করেন, তিনি বিষয়ে বীতরাগ হইয়া ক্রমে ক্রমে অমর-দুস্লভ কৈবল্যপদ লাভ করিয়া প্রধম অধ্যায় সমাপ্ত ।