পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૦ করিতে ইচ্ছদের ; তুহু হইলে তুমি আমার । ইহাই কর প্রসঙ্গক্রমে সকল কথা বলিলাম, এ কথা গ্ল'র আমি তালুত্রে বলিল ন! ! হে রঘুরে ; রাজা দশরথ জামাকে পাঠাইলেন ; রাণ ! আগামীকল্য তিনি তোমাকে রাজ্যে অভি. গিল্প করবেন, তোমাকে ইহা জানানই আমার উদ্দেশ্ব। রাম । আজ তুমি সীতার সহিত যথাবিধি উপবাসপূর্বক গুচি জিতেন্দ্রিয় ও স্বণ্ডিলশাৗ হইয় থাক ; আমি এক্ষণে রাজসন্নিধানে গমন করি, তুমি আগামী কলা প্রাতঃকালে গমন করিবে” । রাজগুরু, এই কথ: বলিয়া রথরোহণ পূর্ব্বক সত্বর প্রস্থান করিলেন । রামও লক্ষ্মণের দিকে চাহিয়; হাসিতে হাসিতে বলিতে লাগিলেন ;– “সৌমিলি ! কাগামী কল্য আমার যৌবরাজ্যে অভি. ষেক হইবে, আমি রাজ্যের উপলক্ষমাত্র থাকিব, তুমিই কর্ত্ত ও ভোক্ত হইবে। তুমি যে আমার বহিশর প্রাণ এবিষয়ে কোন বিতর্ক নাই।” অনন্তর, বসিষ্ঠ যাহা যেরূপ করিতে বলিয়াছিলেন, রাম তাহা তদনুসারেই করিলেন ; বসিষ্ঠও ষে সকল কার্য্য করিয়াছিলেন রাজসন্নিধানে গিয়া তৎসমস্ত নিবেঘন করিলেন। রাজা, যখন বসিষ্ঠ-সম্মুখে রামকে অভিষেক করিবার কথা বলেন তখনই কোন এক পুরুষ তাহা শ্রবণ করিয়া নগরে এই সংবাদ প্রচার করে এবং রাম-জননী কৌসল্যা, ও সুমিত্রার নিকট ব্যক্ত করে। র্তাহারা তাহ শুনিয়—আনন্দপুর্ণ হইয়া সংবাদ-দাতাকে উত্তম হার পারিতোষিক দিলেন । অনন্তর, পুত্রবৎসল কৌসল্যা প্রীতমনে রামের ইষ্টসিদ্ধির জন্য লক্ষ্মীদেবীর সেবা করিলেন ; দশরথ সত্যবাদী, প্রতিজ্ঞাপালন করিয়াই থাকেন; কিন্তু তিনি কামুক এবং কৈকেয়ীর বশতাপন্ন, এ প্রতিজ্ঞ কি রক্ষা করিবেন ?”—এইরূপ চিন্তায় ব্যাকুলচিত্ত হইয়া তিনি দুর্গ দেবীকে পূজা করিতে লাগিলেন ; ইত্যবসরে দেবগণ দেবোপকারিণী দুষ্ট-সরস্বতীকে বলিলেন, “দেবি । ভূমণ্ডলে অযোধ্যানগরে যত্নপূর্বক গমন কর; ব্রহ্মার আদেশে তুমি র ষেকের বিস্তু করিতে ষত্ব কর ; প্রথমে মন্থরাতে, পরে কৈকেয়ীতে অধিষ্ঠান করিও ; তাহার পর বিঘ্ন উপস্থিত হইলে, হে শুভে! পুনর্ব্বার স্বর্গে আগমন করিবে”—এই বলিয়া তাহাকে পাঠাইয়াদিলেন ; তিনিও - যে আজ্ঞা “ বলিয়া তদনুসারে সকল কার্য্য করিয়াছিলেন; পরে তিনি মন্থরাতে প্রবিষ্ট হইলেন। সেই ত্রিবক্র কুঞ্জাও প্রাসাদশিখরে আরোহণ করিল ; নগর সর্বত্র অলঙ্কত ; বহু অধ্যাত্ম-রামায়ণ তোরণ-সস্কুল, পতাকা-শোভিত, ও বিবিধ উংসবরিত হইয়াছে অবলোকন করিং বিক্ষিতভাবে প্রত্যাগত হইল এবং ধাত্রীকে জিজ্ঞাসা করিল ; “মা ! নগর এরূপ অলঙ্কৃত হইয়াছে কেন ? কেনই বা কৌসলা, নানা উৎসবে পরিপূর্ণ হইয়া অতিশয় দুষ্টচিত্রে ব্রাহ্মণশ্রেষ্ঠ-গণকে বিবিধ-বসনাদি দান করিতেছেন।” তখন ধাত্রী তাহাকে বলিল, “আগামী কল্য রামচন্দ্রের রাজ্যভিষেক হইবে, সেই জন্ত আজ নগর সর্বত্র অলস্কৃত হইয়াছে।” মন্থরা তাহা শ্রবণ করিয়া নির্জন স্থানে পর্যাস্কোপরি অবস্থিত বিশাল-নয়ন কৈকেয়ীর নিকট সত্বর গমনপুর্ব্বক এই কথা বলিল ;–“মন্দভাগিনি । মূঢ়ে ! নিশ্চিন্তভাবে শয়ন করিয়া রহিয়াছ কি ? তুমি আপনার সৌন্দর্য্যাভিমানেই মত্ত। কত রঙ্গ-ভঙ্গেই পদবিক্ষেপ কর । কিন্তু উপস্থিত মহাভয়ের বিষয় কিছুই জান না ;–রাজার অনুগ্রহে আগামী কল্য রামের অভিষেক হইবে !” প্রিয়ভাষিণী কৈকেয়ী তাহা শ্রবণ করিবামাত্র তৎক্ষণাৎ উঠিয়া তাহাকে রত্ব-খচিত মুবর্ণময় দিব্য-নূপুর দান করিল এবং কহিল ; “ইহা আমার আনন্দ-স্থান, ইহাতে ভয় উপস্থিত বলিতেছ কেন ? রাম আমার ভরতের বেশী ; সে আমার কখন প্রিয় বই অপ্রিয় কার্য্য করে নাই; প্রিয় বই অপ্রিয় কথা বলে নাই ; কৌসল্যাকে এবং আমাকে সমভাবে দর্শনকরত রাম সর্ব্বদা আমার শুশ্রুষা করে। রে মূঢ়ে। রামের কাছে তোর আবার ভয় উপস্থিত হইল কি ?” দুষ্ট সরস্বতীর আবেশে বৈরিভাবাপন্ন মন্থরা ইহা শুনিয়া বিষণ্ণ হইল এবং বলিতে লাগিল;–দেবি ! আমার কথা শুন, যথার্থই তোমার মহাভয় উপস্থিত হইয়াছে রাজা তোমাকে তুষ্ট করিতে সর্ব্বদা কতক গুলি চাটুবাক্য প্রয়োগ করেন; সেই কামুক এবং মিথ্যাবাদী রাজা তোমাকে বচনমাত্রে সন্তুষ্ট রাখিয়া সেইরাম-জননীরই অপর্য্যাপ্ত হিতকার্য্য করিতেছেন ; এই কাজ করিবেন ভাবিয়াই তিনি আগে থাকিতে তোমার পুত্র ভরতকে মাতুলালয়ে পাঠাইয়া দিয়াছেন ; তাহার কনিষ্ঠ ভাইটাকেও সঙ্গে দিয়া পাঠা. ইয়াছেন । সুমিত্রার ভালই হইবে সন্দেহ নাই ; লক্ষ্মণ, রামের অনুগত ; সুতরাং সেও রাজ্যভোগ করবে। ভরত রামের নিকট কিঙ্কর হইয়া থাকিবে, কি নগর হইতে নির্ব্বাসিত হইবে—বা নিহত হইবে, তাহা বলা যায় না। দাসীর ক্ষায় সর্ব্বদা কোঁসল্যার পরিচর্য্য—তোমাকে করিতে হুইবে । সপস্ত্রীর নিকট অপমানিত হওয়া অপেক্ষ মরণ ভাল ।