পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Neసి তাহাকে নিহত করিয়াছে । তাহ শুনিয়া সকলেই দুঃখিত হইল। তখন বানর-মন্ত্রিগণসকলে, আমি অনিচ্ছুক হইলেও আমাকে রাজ্যে অভিষিক্ত করিলেন। হে রিপূদমন! তখন আমি কিছুকাল রাজ্য শাসন করিলাম । অনস্তুর বালী আসিয়া সক্রোধে আমাকে কটুবাক্য বলিতে লাগিল; এবং অনেক প্রকার ভৎসনা করিয়া আমাকে মুষ্ট্যাঘাত করিল। অনস্তর আমি নগর হুইতে পলায়ন করিলাম ; সাতিশয় ভয়ে সমস্ত লোক ভ্রমণ করিয়া অবশেষে ঋষ্যমূক আশ্রয় করিয়াছি। প্রভু হে! ঋষি-শাপভয়ে, বালী, এই পর্ব্বতে আইসে না। সেই মূঢ়বুদ্ধি বালী, তদবধি আমার ভার্য্যা আপনি ভোগ করিতেছে । এইরূপে জামি হৃতদার ও হুতাশ্রয় হইয়া দুঃখ-দস্তাপে এখানে বাস করিতেছি; আপনার শ্রীচরণ-সংস্পর্শে আজ আমি মুণী হইলাম"। কমললোচন রাম, বন্ধুদুঃখে সস্তপ্ত হইয়া তখন সুগ্রীবসম্মুখে এই প্রতিজ্ঞা করিলেন ; “তোমার ভার্য্যাপহারী দ্বেষ্য ব্যক্তিকে অচিরে নিহত করিব” । সুগ্রীবও বলিল ;–“রাজেন ! বালী—সকল বলবান অপেক্ষা অধিক বলশালী ; দেবগণেরও দুরা ক্রমণীয় ; সেই বীরবরকে আপনি কিরূপে বধ করি. বেন ? হে বলিশ্রেষ্ঠ। শুমুন —আপনার নিকটে তাহার বলের কথা কিছু বলিব। রাম! একদা মহাকায় মহাবল দুন্দুভি নামে দৈত্য, প্রকাণ্ড মহিযরূপ ধারণপূর্বক কিষ্কিন্ধ্যা গমন করে। সেই ভীষণ দৈত্য, রাত্রিকালে বালীকে যুদ্ধার্থ আহবান করে ; পরম কোপন বালী তৎশ্রবণে অধীর হইয়া শৃঙ্গদ্বয় গ্রহণপূর্বক মহিষকে ভূতলে নিপাতিত করিল। এবং তদীয় শরীর, পাদদ্বারা চাপিয়া দুই হস্তে ইহার বিপুল মস্তক ঘুরাইয়া ঘুরাইয়া ছিড়িয়া ফেলিল; এবং তোলা করিয়া ভূতলে নিক্ষেপ করিল। রাম! তদীয় মস্তক মাতঙ্গ মুনির আশ্রমসন্নিধানে নিপতিত হয় | একযোজন উদ্ধে উঠিয়া তথা হইতে মুনিবরের আশ্রম মণ্ডলে পতিত হইয়াছিল। উৰ্দ্ধোথিত ছিন্ন মস্তক হইতে অতিশয় রক্ত বর্ষণ হইয়াছিল, মাতঙ্গ মুনি তাহ দেখিয়া অতি ক্রোধে বালীকে বলেন;–“ইহার পর আর शनि छूहै। আমার এই পর্ব্বতে আসিস্; তাহ হইলে ভগ্ন-মস্তক হইয়৷ মৃত্যু মুখে নিপতিত হইবি, সন্দেহ নাই।” এইরূপ শাপগ্রস্ত হওয়া পর্য্যস্তজার, সে ঋষ্যমূকে আগমন করে না। ইহা জানিয়া আমিও নির্ভয়ভাবে এখানে বাস করিতেছি। রাম! ঐ দেখুন;—সেই দুলুভি দানবের পর্বত-প্রমাণ অধ্যাত্ম-রামায়ণ । মস্তক; যদি আপনি তাহ ছুড়িয়া ফেলিতে সমর্থ হনৃ; তাহা হইলে বালীকে বধ করিতে পারবেন বলিয়া বিশ্বাস হইবে।” এই বলিয়া পর্ব্বত প্রমাণ সেই মস্তক দেখাইল । রাম, তাহ দেখিয়া ঈষৎ হাস্য করত চরণের অঙ্গুষ্ঠ দ্বারা তাহ দশযোজন দূরে ছুড়িয়া ফেলিলেন ; তখন তাহা সকলের আশ্চর্য্য ব্যাপার বলিয়া বোধ হইল। মন্ত্রিগণসহ সুগ্রীব তাহাকে “সাধু সাধু” বলিল; সুগ্রীব, ভক্তবৎসল রামকে পুনরায় কহিল ;–“রঘুবর! দেখুন ; এই মহাসার সপ্ততাল তরু ; বালী— এক একটী করিয়া এই সকল বৃক্ষ অনায়াসে চালিত করিয়া সম্পূর্ণরূপে পত্রশূন্ত করে। যদি আপনি এই সকল বৃক্ষ একবাণে বিদ্ধ করিয়া ছিদ্র করিতে পারেন; তাহা হইলে আপনি বালীবধ করিয়াছেন, আমার এইরূপ বিশ্বাস হয়। রাম “আচ্ছা” ৰলিয়৷ শরামন গ্রহণপূর্বক তাহাতে শর-যোজনা করিলেন । তখন, মহাবল রাম, সপ্ততালতরু ভেদ করিলেন। শ্রীরাম-শরে সপ্ততালতরু, পর্ব্বত এবং ভূমি ভেদ করিয়া পুনরাগমনপূর্ব্বক পূর্ব্ববৎ রামতৃণীরে অবস্থিত হইল। তখন সুগ্রীব অতি হর্ষে ও অতি বিস্ময়ে রামকে বলিল ;–“হে দেব ! তুমি ত্রিলোকের নাথ পরমাত্মা ;–সন্দেহ নাই ; আমার পূর্ব্বজন্মার্জিত পুণ্য-পুঞ্জ-ফলে আজ তুমি আমার সহিত মিলিত হইয়াছ । মহাত্মগণ, সংসার নিবুত্তির জন্ত তোমাকে ভজনা করেন । মোক্ষসহায় তোমাকে পাইয়। আমি সংসারবন্ধন প্রার্থনা করিতেছি কেন ? পুত্র, দার, রাজ্যধন—সকলই তোমার মায়ামূলক ; অতএব হে দেবদেবেশ । আমি অন্য আকভক্ষা করি না ; আমার প্রতি প্রসন্ন হও ; হে সত পতি! মৃত্তিকার জন্য ভূমি-খনন-কারী ব্যক্তির পক্ষে ভূগর্ভ-প্রোথিত ধন রাশির দ্যায় অত্যন্ত ভাগ্যবলে আজ আমি আনন্দানুভব-স্বরূপ তোমাকে প্রাপ্ত হইয়াছি। আজ আমাদিগের অনাদি অবিদ্যাসন্থত বন্ধন ছিন্ন হইল। প্রভু হে ! যজ্ঞ, দান, তপস্যা এবং ইষ্টপুর্ত্ত প্রভৃতি কর্ম্মেও এই সংসার বন্ধন বিদীর্ণ হয় না ; প্রত্যুত, দৃঢ়তা প্রাপ্ত হয় ; কিন্তু আপনার শ্রীচরণ-দর্শনে তাহা তৎক্ষণাৎ বিনষ্ট হয় ; সন্দেহ নাই। যাহার হৃদয় ক্ষণাৰ্দ্ধও তোমাতে স্থিরভাবে অবস্থান করে, সকল অনর্থের মূল, তাহার অজ্ঞান তৎক্ষণাং নষ্ট হইয়া যায়। অতএব, হে রাম! আমার মন সর্ব্বদা যেন তোমাতেই থাকে; অন্যত্র নহে। যাহার বাক্য ক্ষণকালও রাম ੋ বলিয়া মধুর গান করে, সে